দেশের উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম আর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে খেলবেন না।আজ নিজের ভেরিফাইড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি। মুশফিকুর রহিম প্রায় ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশের হয়ে ক্রিকেট খেলছেন।
সম্প্রতি ব্যাট হাতে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে মুশফিক ব্যর্থ হয়েছেন এবং তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন।গত দশটি ইনিংসের মধ্যে সাতটিই দুই অঙ্ক ছোঁয়নি।এশিয়া কাপে খেলতে গিয়ে দুই ম্যাচে মুশফিকুর রহিম ১ ও ৪ রান করে আউট হয়ে গেছেন।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে শুরুতেই ক্যাচ ফেলে দেন মুশফিক, বাংলাদেশ এই ম্যাচে হেরে এশিয়া কাপ থেকে প্রথম পর্বেই বিদায় নেয়ার পর বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকদের অনেকেই মুশফিকুর রহিমের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন।
মুশফিকুর রহিম ১০২টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন, ১৫০০ রান তুলেছেন তিনি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যারা কমপক্ষে ১৫০০ রান তুলেছেন তাদের মধ্যে একমাত্র মুশফিকুরের গড় ২০ এর নিচে, স্ট্রাইক রেটও সর্বনিম্ন।
মুশফিকুর রহিম নিজের পোস্টে লিখেছেন, তিনি গর্বের সাথে ওয়ানডে ও টেস্ট ফরম্যাটে দেশের হয়ে খেলা চালিয়ে যাবেন। সাথে ফ্র্যাঞ্চাইজ লিগের সুযোগ পেলে সেখানেও খেলবেন বলে লিখেছেন।মুশফিকুর রহিম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তের পর ক্রিকেট বিশ্লেষকরা বলছেন এটা ভালো সিদ্ধান্ত।
বাংলাদেশের ক্রিকেট পরিসংখ্যানবিদ রিফাত এমিল লিখেছেন, ধন্যবাদ, টেস্ট ও ওয়ানডের জন্য শুভকামনা।
ক্রীড়া লেখক রেজওয়ান রহমান সাদিদ লিখেছেন, “আপনার ক্যারিয়ারের জন্য সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। এখন আপনি টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটে মনোযোগ দিতে পারবেন। এই দুই ফরম্যাটে আপনার এখনও অনেক দেয়ার আছে। ধন্যবাদ ও শুভকামনা।”
বাংলাদেশের ক্রিকেটাররাও তার পোস্টে নিচে মন্তব্য করেছেন, ফাস্ট বোলার রুবেল হোসেন লিখেছেন, “আপনাকে বাংলাদেশ মিস করবে।”
ক্রিকেট সমর্থকদের অনেকেই তাকে এই সিদ্ধান্তের জন্য সাধুবাদ জানিয়েছেন, তাদের মতে এখন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তরুণ ক্রিকেটারদের বেশি প্রয়োজন।মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা ও তামিম ইকবালের পর মুশফিক বাংলাদেশের তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
চলতি বছর মুশফিকুর রহিমের সাথে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সম্পর্কেও টানাপোড়েন চলছিল। গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর তাকে ‘বিশ্রাম’ দিয়ে দল ঘোষণা করেছিল বিসিবি। দল থেকে বাদ পড়ার পর মিডিয়ায় সরব হয়েছিলেন মুশফিক, নির্বাচকরা তখন ‘বিশ্রাম’ বললেও আসলে তাকে ‘বাদই’ দেয়া হয়েছিল বলেছিলেন তিনি।
বোর্ডের সাথে যে মুশফিকের তখন খুব একটা ভালো যাচ্ছিল না তা স্পষ্ট হয়েছিল টেস্টে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শতক হাঁকানোর দিনে বাংলাদেশি এই ক্রিকেটারের ‘বিদায়’ ইস্যুতে সামাজিক মাধ্যমে তার স্ত্রী জান্নাতুল মন্ডি নিজের ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে মুশফিকুরকে অভিনন্দন জানিয়ে দুটি ছবি পোস্ট করেন যেখানে তিনি লেখেন, “আমরা হাসিমুখেই বিদায় নিবো ইনশাআল্লাহ।”
“তবে আপনাদের রিপ্লেসমেন্ট আছে তো?? সেদিকেও একটু নজর দিলে বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নয়ন হতো।” সরাসরিই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রতি ইঙ্গিত করলেও এ নিয়ে বিস্তারিত আর খোলাসা করেননি কেউই। (বিবিসি বাংলা)