রাজশাহীর গোদাগাড়ীর গোগ্রাম ইউনিয়নের ইটাহারী গ্রামে আদিবাসী নারী ধর্ষন চেষ্টা, মারধর, হুমকির প্রতিবাদে এবং প্রধান আসামী পালাতক জহিরুল ইসলাম কে দ্রুত গ্রেপ্তার ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে জাতীয় আদিবাসী পরিষদের উদ্যোগে আজ ১৭ আগষ্ট ২০২০ সকাল ১১.০০টায় রাজশাহীর সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ রাজশাহী জেলার সভাপতি বিমল চন্দ্র রাজোয়াড়ের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক গনেশ মার্ডি, দপ্তর সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র হেমব্রম, রাজশাহী মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আন্দ্রিয়াস বিশ^াস, কেন্দ্রীয় সদস্য রাজকুমার শাও, আদিবাসী যুব পরিষদ রাজশাহী জেলার সভাপতি উপেন রবিদাস, আদিবাসী ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক তরুন মুন্ডা, আদিবাসী যুব পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য উত্তম কুমার মাহাতো প্রমুখ।
ভুক্তভোগীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ইটাহারী গ্রামের সুমিত্রা মুন্ডা, লুচি মুন্ডা গোগ্রাম পুজাতলা গ্রামে নির্যাতনের শিকার আদরী লাকড়া প্রমুখ। সংহতি বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিষ্ট এবং মুক্তিযোদ্ধা প্রশান্ত কুমার সাহা, ৭১র ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির রাজশাহী জেলা সভাপতি বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা শাহাজাহান আলি বরজাহান, তৃনমুল সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মো. জালাল উদ্দিন।
ইটাহারী গ্রামের প্রত্যাক্ষদর্শী সুমিত্রা মুন্ডা বলেন, “আমরা ভয়ে ভয়ে থাকছি, কখন না আমাদের উপরে হামলা হয়। ভয়ে বাড়ির বাইরে বের হতে পারছি না। পুলিশ আমাদেরকে বলে ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিতে। আমরা বাংলাদেশের নাগরীক আমাদেরও সমান অধিকার আছে আইনি সহায়তা পাওয়ার।” ভুক্তোভোগী লুচি মুন্ডা মুন্ডা বলেন, “জহুরুলের লোকজন আমাদেরকে দা হাসুয়া দিয়ে রাস্তায় ভয় দেখায়। রাস্তা অবরোধ করে দেয়। মারধর করে হুমকি দিতে থাকে”।
বক্তারা বলেন, ইটাহারী গ্রামে আদিবাসী নারী ধর্ষন চেষ্টার মুল হোতা জহুরুল ইসলামকে কেন পুলিশ এখনো গ্রেপ্তার করতে পারে নি। দ্রুত তাকে এবং তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। একজন অপরাধী আদিবাসীদের অত্যাচার নির্যাতন করল আর দেশের আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে সাজা দিতে পারছে না। আদিবাসীরা কি এভাবে অত্যাচার নির্যাতন হতে থাকবে আর রাষ্ট্র আদিবাসীদের ন্যায় বিচারের জন্য কিছুই করতে পারবে না।
একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আদিবাসীরা শোষণ বঞ্চনা আর কতদিন সহ্য করবে। আদিবাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার রাষ্ট্র বারবার ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ৮ আগষ্ট ২০২০ তারিখ দিবাগত রাতে প্রতিবেশি জহুরুল ইসলাম (৪৫) ভুক্তভোগী আদিবাসী নারীর ঘরে প্রবেশ করে ধর্ষনের চেষ্টা করলে নারীর চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন জহিরুল ইসলামকে হাতে নাতে ধরে ফেলে এবং আটক করে রাখে। পরে জহিরুলের লোকজন এসে আদিবাসীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। প্রসঙ্গত যে, জহিরুল ইসলাম ঐ আদিবাসী নারীকে কিছুদিন যাবত শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করতো।