আসুন, মুক্তির গান গায় !

0
129

ইউরোপের ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শক্তিধর রাজা চতুর্দশ লুই ‘রাজ- শাসনে- ক্ষমতার গর্ব করে বলতেন ‘রাজাকে মান্য করাই প্রজার প্রথম ও প্রধান কাজ। পরবর্তীতে তার বংশধর ষোড়শ লুই আরও একধাপ এগিয়ে বলতেন ‘রাজার ধর্মই প্রজার র্ধম।

কিন্তু শেষাব্দি তাদের অপরিসীম ক্ষমতা ও আত্ম-কেন্দ্রীক চিন্তাধারার স্ব-মূল উৎপাটন হয়েছে ‘ফরাসী বিপ্লবের বদৌলতে। ফরাসী বিপ্লবের জনক মুক্তচিন্তা ও মানবতাবাদের মূর্তপ্রতীক, জন রুশো ও ভলতেয়া-রের কলমের আঁচরে ষোড়শ-শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ স্বৈরাচার, গোটা-ইউরোপের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শক্তিশালী-ক্ষমতা-লিপ্সু  লুই-বংশ; -বানের পানিতে ধূঁয়ে মোছে পরিস্কার হয়ে গেছে।

পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ মানবতাবাদী ও গনতন্ত্রের প্রবাদ পুরুষ জন রুশো ও ভলতেয়ারের জনক্যালণ মূখী এই চিন্তাধারা প্রমান করেছে ‘মানবাধিকার প্রতিষ্ঠাই প্রস্ফুটিত জীবন বিকাশের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম।

একথা আজ সর্বজন যে, বহু প্রচীনকাল থেকেই আমাদের এই ভারতীয় ভু-খন্ডে একশ্রেণীর অতিকথন ও পেশি শক্তিতে বলীয়ান শাসক গোষ্ঠির উন্মেষ ঘটেছে যারা ছলচাতুরি কিম্বা মিথ্যা পান্ডিত্যের জ্ঞান দ্বারা খেটে খাওয়া সাধারন মানুষের উপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্ঠা করেছে, সত্য-বাদের ধারাবাহিকতায় কিন্তু শেষাব্দি বিফল হয়ে-ছিটকে পড়েছে ইতিহাসের অতল গহব্বরে।

আধুনিক গনতান্ত্রিক যুগেও আমরা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামো কিম্বা সামাজিক রীতি-নীতিতে এমন অদৃশ্য অপ-শক্তির নিয়ন্ত্রন লক্ষ্য করছি এবং এই শ্রেণীর বহু মাত্রিক অনাগুনায় সমাজ বা রাষ্ট্র অপরীসিম ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে।

সরকারী দালালদের পৃষ্ঠপোষকতায় এই অদৃশ্য শক্তি ক্রমে ক্রমেই সমাজ কিম্বা রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রনের ভূয়াঁ-ফোড় হয়ে উঠছে। ফলে রাষ্ট্রীয় জীবন থেকে শুরু করে সংখ্যানুক ক্ষুদ্র পারিবারিক জীবনও বঞ্চনার স্বীকারে- সর্বনিন্ম স্তরে অবস্থান করছে।

অনৈতিক-কর্ম, ক্ষমতার-অপব্যবহার, দুর্নীতি, লুটতরাজ, ভন্ডামী, ঘুষের মহুরা চলছে রাষ্ট্রতন্ত্রের পৃষ্ঠপোষকতায়। যার প্রত্যক্ষ ফলাফলে জীবন জীবনের কাছে হয়ে উঠছে অসহনীয়-পদধূলীত এবং রং বানিজ্যের খেলাঘর। চাটুকার সরকারী আমলা ও দলবাজরা দেশের উন্নতির নাম করে লুটে নিচ্ছে নিপীড়িত অসহায় গণ-মানুষের সর্বশেষ সম্বলটুকুও।

তা‘হলে রাজনীতিক বা রাষ্ট্র দিয়ে আমাদের লাভ কোথায়? হাজার বছরের শিক্ষা-গবেষণায় ফল কি? কেন এই জ্ঞান চর্চার এতো লাফা-লাফি ? জীবন-মান উন্নয়নের কেন এতো তুর্জনীর ডংকা?

 লুটেরাদের হাত থেকে মুক্তির অভিপ্রায়ে জীবন, জীবনের কাছে প্রশ্ন রাখছে জিগাসার!! আত্ম-চিৎকারে মুক্তি চাচ্ছে-শোষীত শ্রেনীর লৌহ-কপাট পিঞ্জর থেকে। মুক্তি চাই? মুক্তি চাই? মুক্তি-ই সর্বজনীন। কবির ভাষায়-

‘কারার ঐ লৌহকপাট
ভেঙে ফেল কর রে লোপাট
রক্ত-জমাট শিকল পূজার পাষাণ-বেদী

ওরে ও তরুণ ঈশান
বাজা তোর প্রলয় বিষাণ
ধ্বংস নিশান উড়ুক প্রাচীর প্রাচীর ভেদি।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here