বিশ্ব নেতা মিখাইল গর্বাচফ মারা গেছেন !

0
70

সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতা মিখাইল গর্বাচফ ৯১ বছর বয়সে মারা গেছেন। ১৯৮৫ সালে ক্ষমতায় আসার পর তিনি বিশ্বের কাছে সোভিয়েত ইউনিয়নকে উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন। অনেকগুলা সংস্কার কর্মসূচী গ্রহণ করেছিলেন।

কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন তিনি ঠেকাতে পারেননি। মিখাইল গর্বাচফর মৃত্যুতে তার প্রতি সারা বিশ্ব থেকে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ”তিনি ইতিহাসের গতিপথ বদলে দিয়েছিলেন।

‘মিখাইল গর্বাচফ ব্যতিক্রমী একজন রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন। তার মৃত্যুতে বিশ্ব একজন নেতা হারালো যিনি শান্তির জন্য একজন অক্লান্ত সমর্থক ছিলেন । মস্কোর যে হাসপাতালে তিনি মারা গেছেন, তার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে গুরুতর শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। তাকে প্রায়ই হাসপাতালে ভর্তি করতে হচ্ছিল।

গত জুন মাসে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছিল যে, কিডনির জটিলতায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু ঠিক কি কারণে তার মৃত্যু হয়েছে, তা এখনো ঘোষণা করা হয়নি।

১৯৮৫ সালে সোভিয়েত কম্যুনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক হন মিখাইল গর্বাচফ, যখন তার বয়স ৫৪ বছর। সেই সময় তিনি ছিলেন ক্ষমতাসীন কাউন্সিল পলিটব্যুরোর সর্বকনিষ্ঠ সদস্য। তার পূর্বসূরি কনস্তান্তিন চেরনেঙ্কো মাত্র এক বছর দায়িত্বে থাকার পর ৭৩ বছর বয়সে মারা গেলে বয়স্কদের ভিড়ে তিনি দায়িত্ব পান।

তার মূল নীতি গ্লাসনস্তের (উন্মুক্ত হওয়া) ফলে দেশের জনগণ সরকারের সমালোচনা করার সুযোগ পায়, যা অতীতে চিন্তাও করা যেতো না। কিন্তু এর ফলে সোভিয়েত ইউনিয়নের অনেক অঞ্চলে জাতীয়তাবাদী চিন্তার উদ্ভব ঘটে, যার ফলশ্রুতিতে ইউনিয়নের পতন ঘটে।

আন্তর্জাতিকভাবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি করেছিলেন। যখন পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর বাসিন্দারা তাদের কম্যুনিস্ট শাসকদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে শুরু করে, তিনি সেসব দেশে হস্তক্ষেপ করতে রাজি হননি।

পশ্চিমা দেশগুলো তাকে একজন সংস্কারক হিসাবে দেখে, যিনি স্নায়ুযুদ্ধে অবসান করার পরিবেশ তৈরি করেছিলেন। সেই সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে গভীর উত্তেজনা ছিল।

পূব-পশ্চিমের সম্পর্কে ব্যাপক পরিবর্তনে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা রাখার জন্য ১৯৯০ সালে তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান। কিন্তু ১৯৯১ সালে যে নতুন রাশিয়ার জন্ম হয়, সেখানে রাজনীতিক হিসাবে তার তেমন ভূমিকা ছিল না। তিনি বরং শিক্ষা এবং মানবিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন।

১৯৯৬ সালে তিনি একবার রাজনীতিতে ফিরে আসার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাত্র ০.৫ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন।

রাশিয়ার তাস বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, তাকে মস্কোর নভোদেভিচি কবরস্থানে তার স্ত্রীর কবরের পাশে সমাহিত করা হবে, যেখানে অনেক নামী রাশিয়ানের কবর রয়েছে। (বিবিসি বাংলা)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here