শরীয়তপুর প্রতিনিধি ॥ অবৈধ ড্রেজার দিয়ে সরকারি খাস জমি ও নদী থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। ইউনিয়ন পর্যায়ে ভূমি কর্মকর্তারা ড্রেজার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সুবিধা গ্রহণ করে থাকে। তাই চক্রটি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। জেল জরিমানা দিয়েও এই চক্রটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে প্রশাসন হিমসিম খাচ্ছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বিনোদপুর, চন্দ্রপুর, মাহমুদপুর ইউনিয়নের সরকারি খাস জমি ও নদীতে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন করছেন অসাধু বালু ব্যবসায়ীরা।
তারা চওড়া দামে সেই বালু এলাকা বাসীর কাছে বিক্রি করছেন। অবৈধ বালু উত্তোলন চক্রের মূলহোতা পান্নু সরদার। তাকে নিয়ন্ত্রণ করা গেলেই এলাকা থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন নির্মূল হবে বলে এলাকাবাসী ধারণা করছেন।
সদর উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, ২ যুগ ধরে পান্নু সরদার অবৈধ বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত। ইতোমধ্যে একাধিকবার তার ড্রেজার মেশিন পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। ড্রেজারের পাইপ ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে অনেক বার। পান্নু সরদার জেল হাজতে গিয়েছেন এবং জরিমানা দিয়েছেন অসংখ্যবার।
সর্বশেষ তিনি বিনোদপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস সংলগ্ন কীত্তিনাশা নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন শুরু করেন। ১ মার্চ রাতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাসহ ড্রেজার বন্ধ করে দেয়।
সপ্তাহ পাড় না হতেই সেখানে পুনরায় ৭ মার্চ রাত থেকে ড্রেজার চালিয়ে বালু উত্তোলন করছেন পান্নু। আইন আদালত উপেক্ষা করেই তিনি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করবেন।
অবৈধ বালু উত্তোলনকারী পান্নু সরদার বলেন, গত সপ্তাহে ৩ লাখ টাকা জরিমানা দিয়েছি। গত রাত থেকে ড্রেজার পুনরায় চালু করেছি। আরো কিছুদিন বালু উত্তোলন চলবে।
বিনোদপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জানায়, সরকারি ছুটির দিনে ও রাতে ড্রেজার চালায়। ড্রেজার ব্যবসায়ীরা খুব ভয়নক হয় তাই ব্যবস্থা নেওয়া যায় না।
বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ সাকিদার বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলন চক্রটি খুবই বেপরোয়া। গত বছর তার ৪০ শতাংশ জমির বালু কেটে নিয়ে গেছে।
শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, ১ মার্চ রাতে অভিযান চালিয়ে পান্নু সরদারের ড্রেজার বন্ধ করাসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পুনরায় সেখানে ড্রেজার চললে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।