শরীয়তপুর প্রতিনিধি ॥ শরীয়তপুরের বিভিন্ন এলাকায় চায়না ফাদে দেশীয় প্রজাতির মাছ নিধণ চলছে অবাধে। এই মাছ বিক্রি হচ্ছে লোকালয় ও বাজারে। দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষায় প্রশাসন সহ জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের কোন কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়নি।
এই মাছ রক্ষায় খুব শিঘ্রই জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বরত জেলা মৎস্য কর্মকর্তা। শরীয়তপুরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জেলার প্রতিটি পুকুর, দীঘিনালা ও মৎস্য প্রকল্পে মাছের চাষ হয়। প্রকল্পে মাছ চাষের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতিতে দেশীয় প্রজাতির মাছ ধ্বংস করা হয়।
বর্ষার মৌসুমে জেলার নিচু এলাকা বর্ষার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। সেই পানিতে চাই, কারেন্ট জাল, ভেসাল, চায়না ফাঁদ সহ বিভিন্ন পদ্ধতিতে দেশীয় প্রজাতির মাছ শিকার করা হচ্ছে। এমনি ভাবে দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় মাছের প্রজননস্থল ও আবাসস্থল। বাজারে শয়লাব হচ্ছে চাষের মাছ।
ভ্যানোপা এলাকার আশিউর্ধো মজিদ ওঝা জানায়, তাদের এলাকায় প্রচুর দেশীয় প্রজাতির মাছ যেমন, পুঁটি, পাবদা, টেংরা, মলা-ঢেলা, খলিশা, কই, শিং, শৌল, টাকি মাছ পাওয়া যেত। জেলাব্যাপি এই সকল মাছের প্রচুর চাহিদা ছিল। এখন বর্ষা মৌসুমে বাঁধ দিয়ে রুই, কাতল, পাঙ্গাস ইত্যাদি মাছের চাষ করা হয়।
তাই দেশীয় মাছ তেমন দেখা যায় না। যেখানে এখনো মাছ চাষ শুরু হয়নি সেখানে কিছু দেশীয় মাছ দেখা যায়। এখন সেখানেও বিভিন্ন পদ্ধতিতে দেশীয় মাছ নিধণ করা হয়। এর মধ্যে চায়না ফাদের ব্যবহার খুব বেশী দেখা যায়। এই ফাদে বইচামাছ সহ বড় মাছও ধরা পরে।
এমনিভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে আর দেশীয় প্রজাতির মাছ দেখা যাবে না। এখনই সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে দেশীয় মাছ রক্ষায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। মাছ শিকারী ইব্রাহীম জানায়, সে ৭ হাজার টাকায় ৫০ ফুট চায়না জাল (চায়না ফাঁদ) কিনেছে।
প্রতিদিন পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে ১-২ হাজার টাকার মাছ বাজারে বিক্রি করতে পারে। তার জালে ছোট থেকে বড় সকল ধরণের মাছ ধরা পরে। তার জালে ধরা মাছ প্রতিদিন মজিবর বেপারী ও জয়নাল বেপারীর আড়তে দেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রনব কুমার কর্মকার বলেন, দেশী প্রচাতির মাছ শিকার অবৈধ না। তবে যে সকল জাল ব্যবহার করে মাছ শিকার করা হয় তা অবৈধ। মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে অবৈধ জাল নিধণে অভিযান পরিচালনা করা হবে। তাহলে দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষা পাবে।