চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ চাঁপাইনবাবগঞ্জে মাত্র কয়েকদিনের মাথায় আবারও ছুরিকাঘাতে এক যুবক খুন হয়েছে। এঘটনায় আহত হয়েছে আর একজন। এঘটনায় নিহত সাব্বিরের পিতা মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে ৫জনকে এজাহার নামীয় আসামী এবং ৬/৭জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে শুক্রবার রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
এঘটনায় রাতেই অভিযান চালিয়ে রাজশাহী জেলার তানোর থেকে এজাহার নামীয় ৫ আসামীকে গ্রেফতার করেছে সদর থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার এক নম্বর কলোনী জিয়াউর রহমানের ছেলে সুরাত (২১) আলী, করিমের ছেলে সুরাজ আলী (১৯), মৃত খাইবার আলীর ছেলে মোঃ নূর সালাম (২০), শহরের মসজিদ পাড়ার আলমগীর হোসেনের ছেলে মোঃ সবুজ (২২), একই এলাকার মোঃ সিরাজুল ইসলামের ছেলে মোঃ সাদেকুল (২০)। পর পর এমন ঘটনা শহরবাসীকে আতংকিত করে তুলেছে।
জনমনে একটা ভীতির সঞ্চার হয়েছে। কোরবানীর ঈদের দিবাগত রাতে নয়ন নামের যুবক ছুরিকাঘাতে খুন হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট এলাকার নারী-পুরুষ রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে। নয়ন হত্যাকান্ডের ঘটনায় পুলিশ ৬জনকে গ্রেফতার করেছে।
এর মধ্যেই আবারও ছুরিকাঘাতের ঘটনা। হঠাৎই কেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এমন অবনতি। এমন প্রশ্ন সন্তানহারা পরিবার ও সচেতন মহলের। তবে, পুলিশ বলছেন, শুধু আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহীনি দিয়েই এসব ঘটনা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়, প্রয়োজন সামাজিক সচতেনতার।
পরিবার ও সামাজিক সচেতনতাই পারে এসব অপ্রীতিকর ঘটনা বন্ধ করতে। জানা গেছে, শুক্রবার মোটর সাইকেল ওভারটেক করা নিয়ে বাকবিত-ার সময় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে সাব্বির (২০) নামে এক ছাত্র নিহত হয়। নিহত সাব্বির, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার টিকরামপুর আদর্শ মোড় এলাকার মনিরুল ইসলামের ছেলে।
এঘটনায় নিহত সাব্বিরের বন্ধু আশিক আহত হয়েছে। নিহত সাব্বির চাঁপাইনবাবগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টি-টিউটের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও আহত আশিক রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মেকানিকাল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
স্থানীয় ও পুলিশ সুত্র জানায়, শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে টিকরামপুর মধ্যপাড়া এলাকায় তিনতলা মসজিদের সামনে রাস্তার উপর সাব্বির তার বন্ধু আশিককে নিয়ে মোটরসাইকেলে ঘুরছিল।
এসময় পৌরএলাকার এক নম্বর কলোনী মহল্লার জিয়ার ছেলে সুরাত আলীসহ ৪-৫জন অপর ৩টি মোটর সইকেল নিয়ে তাদের ওভারটেক করছিল। এনিয়ে সাব্বিরের সাথে সুরাত আলীর বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে সাব্বির ও তার বন্ধু আশিককে তারা ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সাব্বিরকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করলে পথিমধ্যে গোপালপুর এলাকায় সে মারা যায়। সদর মডেল থানার ওসি (অপারেশন) মাহফুজুল হক চৌধুরী বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এঘটনায় মামলা হয়েছে এবং জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
তিনি বলেন, সাব্বির হত্যাকান্ডের ঘটনায় ৫ আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দ্রুতই বাকী আসামীদের গ্রেফতারে সক্ষম হবে পুলিশ। হঠাৎই আইন শৃঙ্খলার এমন অবনতি বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন ঘটনা অনাকাঙ্খিত।
শুধু আইন বা শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহীনি দিয়েই এসব অপ্রীতিকর ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, এক্ষেত্রে সামাজিক সচতেনতার প্রয়োজন। পরিবার ও সামাজিক সচেতনতাই পারে এসব অপ্রীতিকর ঘটনা বন্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে।