চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ এগিয়ে আসছে কোরবানীর ঈদ। তাই কোরবানীর পশু কেনার জন্য সামর্থবানরা ইতোমধ্যেই পশু পছন্দ ও দাম নিয়ে আলোচনা করছেন। কেউ কোরবানীর গরু বা ছাগল কিনে নিয়েছেন। কেউ যাচায়-বাছায় করছেন পশুর দাম ও ধরণ।
এমনই এক পশু কোরবানীতে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় মেঘনা ডেইরী ফার্ম। কুরবানির জন্য লালন পালন করা ধুরস সাদা রঙের ষাঁড়টির মাথার দিকের কিছু অংশে কালো রঙও আছে। মাথার শিংগুলো
ছোট ছোট, শান্ত প্রকৃতির ষাঁড়টির নাম রাখা হয়েছে ‘মহারাজ’।
চাল চলন আর অঙ্গভঙ্গি কিন্তু মহারাজের মতোই। গরুর মালিক ষাঁড়টির দাম হেঁকেছেন ১৫ লাখ টাকা। মেঘনা ডেইরী ফার্ম সুত্রে জানা গেছে, গত ৩ বছর আগে হলিস্টিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের একটি গাভি মহারাজকে জন্ম দেয়। গত বছর কুরবানিতে মহারাজের দাঁত না গজালের এক বছরের মাথায় এখন ৬টি দাঁত গজিয়েছে। মহারাজকে দিনে অন্তত ৩- ৫ বার গোসল করায় ওই ফার্মের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা।
মেঘনা ডেইরি ফার্মে মহারাজের দেখভাল করেন সেরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা মহারাজসহ খামারে প্রতিটা গরুকে খুব যতেœ লালন পালন করি। সারাদিন শ্রম দেয়, গরু গুলো দেখভা লের জন্য। মহারাজ সবচেয়ে শান্তশিষ্ট। এছাড়াও এ খামারে দেশিজাতের ৭-৯ মনের পাঁচ-ছটি গরু আছে। ওই খামারের আরেক কর্মী আব্দুল মান্নান বলেন, ‘মহারাজকে দিনে অন্তত ৫ বার গোসল করাতে হয়। মহারাজের দেখ ভালের জন্য একজন লোক সার্ববক্ষনিক নিয়োজিত থাকেন।
ষাঁড়টি প্রতিদিন ১০ কেজি ভুষি, আট কেজি খুদি, গরুর জন্য বিগফিড ৫ কেজি, আর কাচা ঘাস প্রায় ১০ খায়। প্রায় ৩০ লিটার পানি পান করেন ষাঁড়টি। মেঘনা ডেইরি ফার্মের স্বত্তাধিকারী এস.এম কামাল বলেন, মহারাজের বয়স ৩ বছর, ছোট থেকে তার সব কিছু ভিন্নতা দেখতে পেয়েছি। তার জন্মের সময়কার সব গরু-বাছুর বিক্রি করে দিলেও তাকে বড় করার আশায় বিক্রি করিনি।
গত বছর মহারাজের দাঁত না গজার কারনে কুরবানিতে বিক্রি করা হয়নি। মহারাজের এখন ৬টি দাঁত। এ গরুর দাম ১৫ লাখ টাকা। খামারি এসএম কামাল আরও বলেন, গোখাদ্যের দাম চড়া। যে গম কিনেছিলাম ২০ টাকা কেজিতে এখন বাজারে বিক্রি হচ্ছে, ৪০-৪৫ টাকা দরে। খৈল, ভুষি, ঘাস, ফিডসহ সব ধরণের খাদ্যের দাম বেড়েছে। আমার খামারে ১৬ টা কুরবানি যোগ্য পশু আছে। এ পশু গুলো বিক্রি করতে গিয়ে নায্য দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কিত আছি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রানী সম্পদের কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মেঘনা ডেইরি ফার্মের স্বত্তাধিকারী কামালের খামারে বড় ষাঁড় আছে। সে আমাদের কাছ পরামর্শ নেয়, আমরাও তাকে পরামর্শ দিই। এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ উপজেলায় ৩ হাজার ২৩৫টি হাজার খামারে ৪৪ হাজার ৮৯৬টি গবাদিপশু কুরবানির জন্য লালন পালন করছে খামারিরা।