চরিত্রের প্রয়োজনে কত কিছুই না করতে হয় অভিনেত্রীদের। ঢাকাই ছবির জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা বিদ্যা সিনহা সাহা মিমও চরিত্রের প্রয়োজনে নানা রূপ ধারণ করেছেন। এবার এই অভিনেত্রী চরিত্রের প্রয়োজনে ফিরে যাচ্ছেন ২৭ বছর আগের এক দিনে।
১৯৯৫ সালে ধর্ষণের শিকার ইয়াসমিনের চরিত্রে নিজেকে হাজির করবেন এই অভিনেত্রী। ছবির নাম ‘আমি ইয়াসমিন বলছি’। গত বুধবার রাতে ছবিটিতে চুক্তিবদ্ধ হন তিনি।
মিম বলেন, ‘এখন সব ধরনের চিত্রনাট্যে কাজ করছি না। একটু চিন্তাভাবনা করে ছবির কাজ হাতে নিচ্ছি। এই ছবি নিয়ে পরিচালকের সঙ্গে ছয় মাস ধরে কথা হচ্ছিল। সত্য ঘটনা অবলম্বনে গল্পটি যখন পড়ি, কেঁদে ফেলেছিলাম আমি।’
ছবির গল্প প্রসঙ্গে মিম জানান, গল্প জানতে হলে ফিরে যেতে হবে ২৭ বছর আগে। ১৯৯৫ সালের ২৪ আগস্ট। দীর্ঘদিন পর মাকে দেখার জন্য আকুল হয়ে ঢাকা থেকে দিনাজপুরে বাড়ি ফিরছিল ইয়াসমিন। দিনাজপুরের কোচে না উঠতে পেরে পঞ্চগড়গামী কোচে ওঠেন তিনি। কোচের লোকজন তাকে দিনাজ পুরের দশমাইলে নামিয়ে দিয়ে সেখানকার এক চায়ের দোকানে বসতে বলেন।
নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ইয়াসমিনকে দিনাজপুর শহরে মায়ের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য খুব ভোরে পুলিশের হাতে তুলে দেয় এলাকাবাসী। পথে কয়েকজন পুলিশ সদস্য কিশোরী ইয়াসমিনকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের পর হত্যা করে।
এরপর তারা ইয়াসমিনের মরদেহ দিনাজপুর শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে দিনাজপুর সদর উপজেলার ব্র্যাক অফিসের পাশে রাস্তায় ফেলে চলে যান। পর দিন ঘটনা জানাজানি হলে কয়েক হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা দিনাজপুর শহরের রাস্তায় প্রতিবাদ মিছিল বের করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানান।
তৎকালীন পুলিশ প্রশাসন এ ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে উল্টো ইয়াসমিনকে ‘যৌনকর্মী’ হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এতে আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন দিনাজপুরের প্রতিবাদী জনতা। বিক্ষোভে ফেটে পড়েন দিনাজপুরের সর্বস্তরের মানুষ।
সে সময় শহরের বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে গুলি চালায় পুলিশ। ফলে সামু, কাদের ও সিরাজসহ নাম না জানা সাতজন নিহত হন। আহত হয় ৩০০’র বেশি মানুষ।
সত্য ঘটনা অবলম্বনে ছবিটি পরিচালনা করবেন সুমন ধর। এর আগে চরকির জন্য ‘চিঠি’ নামের একটি ওয়েব ফিল্ম বানিয়েছেন তিনি। জানালেন, দুই বছর ধরে ‘আমি ইয়াসমিন বলছি’ সিনেমাটির গল্প নিয়ে কাজ করছেন তিনি।