ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন সংস্কারপন্থী নেতা মাসুদ পেজেস্কিয়ান। জোর টক্কর দিয়ে তিনি পরাজিত করেছেন কট্টরপন্থী নেতা সাইদ জালিলিকে। ইব্রাহিম রাইসির উত্তরসূরি হিসাবে পেজে-স্কিয়ানকে বেছে নিয়েছেন ইরানিরা।
শনিবার ইরানে দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে সাইদ জালিলিকে পিছনে ফেলে প্রেসিডেন্টের কুরশি দখল করে নিয়েছেন পেজেস্কিয়ান।
এদিন পেজেস্কিয়ানকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ, সৌদি আরবের যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন-সহ অন্যান্য রাষ্ট্রনেতারা।
ইরানের নতুন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধি ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত করার বার্তা দিয়েছেন সকলে।
গত মে মাসে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ইরানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। তাঁর মৃত্যুর পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠে ছিল এবার ইসলামিক দেশটির প্রেসিডেন্টের আসনে কে বসবেন?
রাইসির উত্তরসূরি খুঁজতে গত ২৮ জুন, শুক্রবার, প্রেসিডেন্ট পদের জন্য একদফা ভোটপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় ইরানে। কিন্তু তার ফলাফল দাঁড়ায় ত্রিশঙ্কু।
ইরানের নির্বাচনের নিয়ম অনুযায়ী জয়লাভ করার জন্য প্রার্থীকে ৫০ শতাংশ ভোট পেতে হবে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের কারও ঝুলিতেই সেই সংখ্যক ভোট পড়েনি।
ফলে ৫ জুলাই শুক্রবার, ফের দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন হয় সেদেশে। এদিন মোট ভোট পড়ে ৩ কোটি। যার মধ্যে চরমপন্থী জালিলির ঝুলিতে যায় ১ কোটি ৩০ লক্ষের উপর ভোট। কিন্তু তাঁকে পিছনে ফেলে ১ কোটি ৭০ লক্ষের উপর ভোট নিয়ে এগিয়ে যান সংস্কারপন্থী পেজেস্কিয়ান।
শনিবার, দ্বিতীয় দফার ভোটের ফলাফল ঘোষণা করে ইরানের নির্বাচনী কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র মোহসেন ইসলামি বলেন, এই দফায় ভোটারদের উপস্থিতি ৪৯.৮ শতাংশ। সংস্কারপন্থী নেতা পেজেস্কিয়ানের এগিয়ে থাকার কথা জানায় ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
বিশ্লেষকদের মতে, পেজেস্কিয়ানের জয়ে আশার আলো দেখছেন ইরানের প্রগতিশীলরা। কট্টরপন্থার সঙ্গে শিয়াপন্থী দেশটির উদারপন্থীরা লড়ছেন বহুদিন ধরে।
হিজাব প্রশ্ন-সহ মানবাধিকার, নারী স্বাধীনতার মতো একাধিক ইস্যুতে সেই লড়াইয়ে উত্তাল হয়েছে ইরান। পেজেস্কিয়ানের জয় সেই লড়াইয়ের পথ আরও মসৃণ করবে কিনা সেদিকেই নজর থাকবে গোটা দুনিয়ার।