ঝিনাইদহে শ্যালিকার সঙ্গে পরকীয়া; নবজাতককে গলা টিপে হত্যা, আটক ৩

0
107

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ- ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে সদ্য ভুমিষ্ঠ এক ছেলে শিশুকে গলা টিপে হত্যার অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতা হচ্ছে নবজাতকের মা
নুরুন্নাহার, নানি কমলা খাতুন ও মায়ের প্রেমিক আলিফ আবেদীন গুঞ্জন।

পুলিশ ও হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে, সোমবার রাতে ঝিনাইদহ আড়াই’শ বেড জেনারেল হাসপাতালে নুরুন্নাহার নামে এক ডিভোর্সি নারীর ছেলে সন্তানের জন্ম হয়।

নবজাতক ছেলের পিতৃ পরিচয় নিয়ে হাসপাতালের স্টাফরা প্রশ্ন তুল্লে গোপনে মা নুরুন্নাহার ও নানি কমলা খাতুন সুস্থ নবজাতককে গলাটিপে হত্যা করে। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ সৈয়দ রেজাউল ইসলাম খবরের সত্যতা স্বীকার করে জানান, হাসপাতালে নুরুন্নাহার সুস্থ বাচ্চা প্রসব করে।

কিন্তু বাচ্চার পিতৃ পরিচয় নিয়ে শোরগোল শুরু হলে ঘটনাস্থলে আলিফ আবেদীন গুঞ্জন নামে এক যুবক উপস্থিত হয়। তখন ডিভোর্সি নারি শিশুটির পিতা আলীফ আবেদীন গুঞ্জন বলে জানায়। হাসপাতালের তত্বাবধায়কের ভাষ্যমতে শিশুটির মা ও নানি পরিকল্পিত ভাবে নবজাতককে হত্যা করেছে বলে মনে হচ্ছে।

এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ নবজাতকের মা হরিণাকুন্ডু উপজেলার হামিরহাটি গ্রামের মৃত আকতার হোসেনের কন্যা নুরুন্নাহার, নানি কমলা খাতুন ও মায়ের প্রেমিক ব্যাপারীপাড়ার মৃত. তারেক আবদেীনের ছেলে আলিফ আবেদীন গুঞ্জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সদর থানায় নিয়ে যায়।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, আলীফ আবেদীন গুঞ্জন হামিরহাটী গ্রামের মোজাম মহুরীর কন্যাকে বিয়ে করেন। মোজাম মহুরীর ভায়ের মেয়ে নুরুন্নাহারকে তালাক দিতে বাধ্য করে গুঞ্জন। পরে নুরুন্নাহারের সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলে গুঞ্জন।

এক পর্যায়ে নুরুন্নাহার গর্ভবতী হয়ে পড়ে। পিতৃ পরিচয় নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে এমন শংকা থেকে গুঞ্জনের সহায়তায় নুরুন্নাহার ও তার মা কমলা খাতুন নবজাতককে হত্যার ছক কষে।

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি (অপারেশন) হরিদাশ রায় জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের লিখিত অভিযোগের পর পুলিশ তদন্ত শুরু করছে। প্রাথমিক পর্যায়ে এ ঘটনার সত্যতাও পাওয়া গেছে। তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। পুলিশ বাদি হয়ে মামলা করার পক্রিয়া চলছে।

এদিকে আরেকটি সুত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত ৯ টার দিকে একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তানের জন্ম দেয় সে। এরপর শিশুটির নানী তাকে নিয়ে ওয়ার্ড থেকে বের হয়ে যায়। পরে শিশুটিকে হাত পা ভাঙ্গা অবস্থায় ওয়ার্ডে নিয়ে আসে নানী।

নার্সরা বিষয়টি চিকিৎসককে জানালে শিশুটিকে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাত ১১ টার দিকে তার মৃত্যু হয়। পরে সন্দেহ হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে মা ও নানীকে আটক করে। শিশুটি অবৈধ সম্পর্কের বলে দাবি তার মায়ের।

পরে পরকীয়া সম্পর্কে জড়ানো ব্যাক্তিকেও আটক করে পুলিশ। শিশুটির শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে শিশুটিকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানায় পুলিশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here