ঝিনাইদহে মিষ্টির লোভ ২য় শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ!

0
190
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ- ঝিনাইদহ সদর উপজেলার রাধাকান্তপুর গ্রামের মিরাজ হোসেনের নামে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে রাধাকান্তুপুর গ্রামের মাছুদের ছেলে মিরাজ পাশের বাড়ির প্রবাসী কামরুলের ২য় শ্রেণির ছাত্রী ৮ বছরের শিশু দিয়া খাতুকে মিষ্টি দেওয়ার লোভ দেখিয়ে তাদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করেছে ভিকটিমের পরিবার।
এবিষয়ে ২৮শে মার্চ ঝিনাইদহ সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। যার মামলা নং ৬৪। গত কয়েকদিন পার হয়ে গেলেও এখনো আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার রাধাকান্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি প্রথমে চেচামেচি শুনে স্কুলের পাশে প্রবাসী কামরুলের বাড়িতে যায়।
সেখানে গিয়ে মাছুদের ছেলেকে কামরুলের ঘরে আটকা দেখতে পায়। পরে আমার স্কুললের ২য় শ্রেণির ছাত্রী মোছাঃ দিয়া খাতুন কে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়, মিষ্টি খাওয়ার লোভ দেখিয়ে মিরাজ তাকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ করার সময় চিৎকার করলে তার মুখে ক্যাপ দিয়ে চেপে ধরে।
তিনি আরো বলেন, সে কান্নাকাটি করলে আশেপাশের লোক তাকে উদ্ধার করে। কিছুক্ষণ পর মিরাজ দিয়ার মাকে ভয় দেখিয়ে বলে এই কথা যদি কাউকে বলো তাহলে তোমার মেয়েকে মেরে ফেলবো। তখন দিয়ার মা কৌশলে তাদের ঘরের একটি কক্ষে মিরাজ কে আটকে ফেলে চিৎকার করলে আশেপাসের লোজন ছুটে আসে এবং বিষয়টি জানতে পারে।
হলিধানী ইউনিয়নের সাবেক মহিলা সদস্য মোছাঃ লিলি খাতুন জানান, পাশের গ্রামে কামরুলের মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে আমি ওই বাড়িতে উপস্থিত হয়। সেখানে গেলে জানতে পারি, পাশের বাড়ির মাছুদের ছেলে মিরাজ মিষ্টি খাওয়ার লোভ দেখিয়ে কামরুলের মেয়ে ২য় শ্রেণীর ছাত্রী দিয়া খাতুন কে ধর্ষণ করেছে।
এরপর দিয়ার মা মিরাজকে ঘরে আটকে রেখেছিলো কিন্তু গ্রামের আশিরদ্দীন জোয়াদ্দার বিচার করে দিবে বলে ঘর থেকে বের করে দেয়। তখন আমি কাতলামারী পুলিশ ক্যামে খবর দিলে পুলিশ এসে মেয়ে ও মেয়ের মাকে থানায় নিয়ে যায়।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কাতলামাী ক্যামের এস.আই এনামুল হক বলেন, আমি ঘটনার দিন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি, এলাকার রাধাকান্তপুর গ্রামের মাছুদ মন্ডলের ছেলে মিরাজ ২য় শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খাতুনকে খারাপ কাজের উদ্দেশ্যে একটি আবদ্ধ ঘরে নিয়ে তাকে ধর্ষন করে।
পরে মেয়েটি চিল্লাচিল্লি করার পরে এলাকার লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে। ওখানে যাবার পরে আশে পাশের লোকজনের কাছে জিজ্ঞাসা করলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। পরে ঘটনার সত্যতা যাচায়ের জন্য মেয়ে ও মেয়ের মাকে সদর থাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
দিয়ার মা রতœা খাতুন জানান, মিরাজ গত একবছর ধরে আমার মেয়ের সাথে খারাপ কাজ করে আসছে। একদিন লাঠি মিষ্টি দেবার কথা বলে মেয়েকে একটা বাগানে নিয়ে গিয়ে খারাপ কাজ করে। পরে জানতে পারলে সে এমন কাজ আর কখনো করবে না বলে আমাদের কাছে হাত পাঁ ধরে মাফ চেয়ে যায়।
কিন্তু হঠাৎ শনিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে আমার মেয়ের কান্নাকাটি শুনে সবাই মিলে মিরাজদের বাড়ি থেকে আমার মেয়েকে নিয়ে আসি। এবং কিছুক্ষণ পর মিরাজ এই বিষয়টি কাউকে যেন না বলি এজন্য আমাকে ও আমার মেয়েকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরে মিরাজকে জোরকরে ধরে ঘরের ভিতর আটকে রেখে এলাকাবাসিকে আবারো খবর দিই।
পরে পাশের বাড়ির আশির উদ্দীন জোয়াদ্দার সামাজিক ভাবে মিটিয়ে দিবে বলে মিরাজকে ঘর থেকে বের করে দেয়। কিছুক্ষণ পর পুলিশ আসলে তাদের সাথে থানায় গিয়ে মিরাজের নামে মামলা করেছি। আমি চাই সে যেন এই কুকর্মের শাস্তি পায়।
ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, আমরা ঘটনা জানার পর সাথে সাথে ওখানে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু বাদি প্রথমে স্বীকারই করতে চাইনি।
পরে আমরাই সত্যতা বেরকরছি ওই বাচ্চার সাথে একটা কিছু হইছে। তারপর গত ২৮শে মার্চ (রোববার) মেয়েটির মা রতœা খাতুনকে বাদি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটা মামলা করিয়েছি। আসামী মিরাজকে ধরার জন্য অভিযান অব্যহত রেখেছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here