Home খুলনা বিভাগ কচুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানের মৃত্যুতে এলোমেলো রাজনীতির মাঠ! নেপথ্যে নির্বাচন
শেখ সাইফুল ইসলাম কবির: বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলা পরিষদের প্রায়ত চেয়ারম্যান এস এম মাহফুজুর রহমানের মৃত্যর পর তার পরিবারকে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।
এই ষড়যন্ত্রের পিছনে রয়েছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে যাতে প্রায়ত চেয়ারম্যান এস এম মাহফুজুর রহমানের ছেলে মেহেদী হাসান বাবু দলীয় মনোনয়ন না পায় এ জন্য কতিপয় ব্যক্তি এই নোংড়া খেলায় মেতেছে।
বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলা পরিষদের তিনবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান এসএম মাহফুজুর রহমান ছিলেন কচুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার আগে তিনি একাধিকবার রাড়ীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তার ত্যাগ ও সংগ্রামের ইতিহাস রয়েছে। শেখ পরিবারের জন্য ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। বাগেরহাট খুলনা অঞ্চলে এক নামেই ছিলেন পরিচিত। কচুয়ায় ছিলো ব্যাপক জনপ্রিয়তা।
এলাকার মানুষের জন্য ছিলেন বটবৃক্ষের মত। কিন্তু গত ৫ মে প্রিয়জনদের কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি দেন কচুয়ার এই অভিভাবক । কচুয়ায় এখনো বিরাজ করছে তাকে হারানোর শোক। কেউ কাঁদছেন প্রকাশ্যে, কেউ চোখের জল মুছছেন গোপণে। একদিকে যখন তার পরিবার ও শুভাকাঙ্খীরা শোকে কাতর, অন্যদিকে তখন চলছে নোংড়া খেলা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে জানিয়েছেন, এই খেলার নেপথ্যে রয়েছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। স্থানীয় জনগন ও দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে মাহফুজুর রহমানের সুনাম দীর্ঘেদিনের। এখানকার আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তার অবদান অনেক। যার ফলে তার পরিবারের প্রতি দলের সহানুভূতি থাকা স্বাভাবিক।
সেই সহানুভুতির জায়গা থেকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মাহফুজুর রহমানের ছেলে মেহেদি হাসান বাবুর দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । বাবু যাতে দলীয় মনোনয়ন না পায়, সেজন্য ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে । একটি পক্ষ বাবু ও তার পরিবারের সুনাম এবং ভাবমুর্তি নষ্টের পায়তারা চালাচ্ছে।
অন্য একটি উপজলার উদাহরণ টেনে তারা বলেন, শরণখোলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আকন মারা গেলে দল থেকে সেখানে তার ছেলেকে উপজেলা পরিষদে নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন দেওয়া হয়।
শরণখোলায় যদি চেয়ারম্যানের ছেলে মনোনয়ন পান, তাহলে কচুয়ায়ও মাহফুজুর রহমানের ছেলে মেহেদি হাসান বাবু মনোনয়ন পাওয়ার যোগ্য। কারণ বাবু রাজনৈতিক ভাবে অনেক বেশি পোক্ত ও জনপ্রিয়; নির্যাতিতও। বর্তমানে তিনি রাড়ীপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
বাবার সুনাম ও বাবুর জনপ্রিয়তাই পতিপক্ষ অনেকের ইর্ষা ও ভয়ের কারণ। রাড়ীপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিকাশ দত্ত বলেন, দাদা (এসএম মাহফুজুর রহমান) মারা যাওয়ার পর আমাদের অস্তিত বিলিন করে দেওয়ার জন্য একটি পক্ষ তার পরিবার নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র করছে।
তাদের উদ্দেশ্য বাবু যাতে উপজেলায় দলীয় মনোনয়ন না পায়। দাদার জায়গায় বাবুর চেয়ে আর কাউকে আমরা যোগ্য দেখি না। বাবুর জনপ্রিয়তাকে তারা ভয় পায়। ইর্ষান্বিত হয়ে তারা ষড়যন্ত্র করছে। যত ষড়যন্ত্র করুক, আমরা প্রতিহত করবো।
মেহেদি হাসান বাবু বলেন, বাবা বেঁচে নেই। তার দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। তিনি ছিলেন ত্যাগী এবং নির্যাতিত। রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন অগ্রনী ভূমিকায়। এলাকার মানুষ জানেন, তিনি কতোটা জনপ্রিয় ছিলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, বাবার মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে আমাদের পরিবার নিয়ে নোংড়া ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।যা কোনো ভাবেই কাম্য নয়।
উপজেলায় মনোনয়ন চাইবেন কিনা জানতে চাইলে বাবু বলেন, কদিন মাত্র আমার বাবা মারা গেছেন। আমরা সেই শোক সামলাতে পারছি না। এরই মধ্যে আমরা হামলা-মামলারও শিকার হয়েছি। এখন উপজেলা নির্বাচন নিয়ে ভাবছি না। দল যে সিদ্ধান্ত নেবে আমি তাতেই আছি।দলের বাইরে কখনো কিছু করিনি। ভবিষ্যতেও করবো না।
হিংসাত্মক রাজনীতি থেকে নিজের পরিবারকে রক্ষার জন্য বাগেরহাট ১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, বাগেরহাট ২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ তন্ময় ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন মো. মেহেদি হাসান বাবু ।