শরীয়তপুর প্রতিনিধি ॥ পদ্মা নদীর মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া-শরীয়তপুরের মঙ্গলমাঝি ঘাট নৌ-রুটে দুই ফেরির মুখোমুখি
সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছে। এই দুর্ঘটনায় আরো একজন নিখোজ হওয়াসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। আহতরা জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও মুন্সিগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
আজ রোববার ভোর পৌনে ৪টায় পদ্মা নদীর মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া-শরীয়তপুরের মঙ্গলমাঝি ঘাট রুটের জাজিরা টার্নিং পয়েন্টে বেগম রোকেয়া ও বেগম সুফিয়া কামাল ফেরির মুখোমুখি সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় বেগম সুফিয়া কামাল ফেরিতে থাকা পিকআপ ভ্যান চালক খাকন শিকদার (৪০) নিহত হন।
আর বেগম রোকেয়া ফেরিতে থাকা অপর পিকআপ ভ্যান চালক শামীম হোসেন মোল্লা (৪০) নিখোঁজ রয়েছেন। নিহত খোকন ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া চিংবাখালি এলাকার হারুন শিকদারের ছেলে। নিখোঁজ শামীম ঢাকা লালবাগের ২৩নং কাজী ইয়াজউদ্দিন রোড এলাকার কাশেম আলী মোল্লার ছেলে।
দুই ফেরির সংঘর্ষের ঘটনায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন (বিআইডব্লিউটিসি) ৪সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। বিআইডাব্লিউটিসি শিমুলিয়াঘাটের ব্যবস্থাপক (বানিজ্য) মো: জামাল হোসেন ও বিআইডব্লিউটিএ সাত্তার মাদবর মঙ্গলমাঝি ঘাটের শুল্ক আদায়কারী তৌফিকুল ইসলাম জানান, ফেরি বেগম সুফিয়া কামাল ৩০টি যানবাহন নিয়ে শরীয়তপুরের মঙ্গলমাঝি ঘাট থেকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়ার পথে ও ৩৪টি যানবাহন ও অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে বেগম রোকেয়া ফেরি মঙ্গলমাঝি ঘাটে অভিমুখে আসছিল।
দুটি ফেরি পদ্মা নদীর প্রবল ¯্রােতের কারনে জাজিরা চ্যানেলের টার্নিং পয়েন্ট পৌছালে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে দুইটি ফেরির সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিকল হয়ে যায় বেগম রোকেয়া ফেরি গাড়ি উঠানামার র্যাম্প।
ফেরি সুফিয়া কামাল ফেরিতে থাকা একটি গাড়িতে চাঁপা পড়ে ঘটনাস্থলেই পিকআপ ভ্যান চালক খোকনের মৃত্যু হয়। বেগম রোকেয়া ফেরিতে থাকা পিকআপ ভ্যান চালক শামীম হোসেন মোল্লা নিখোঁজ হন। এই দুর্ঘটনায় দুই ফেরির অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে এবং ফেরিতে থাকা ১০/১২টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
নিখোঁজ শামীমকে উদ্ধারে কাজ করছে নৌপুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরী দল। বেগম সুফিয়া কামাল ফেরির মাস্টার হাসান ইমাম বলেন, নদীতে প্রবল ¯্রােতের কারনে টার্নিংয়ে নিয়ন্ত্রণ হারালে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। মাওয়া নৌপুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ আবু তাহের বলেন, ফেরি দুর্ঘটনায় নিহত ব্যাক্তির মরদেহ মাওয়া নৌপুলিশ ক্যাম্পে রয়েছে।
আইনী পক্রিয়া শেষে নিহতের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। দুই ফেরির সংঘর্ষের ঘটনার পর আজ রোববার দুপুরে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন (বিআইডব্লিউটিসি) কর্মকর্তারা শরীয়তপুরের মঙ্গলমাঝি ঘাটে আসেন। এর পর দুর্ঘটনার বিষয়টির কারন জানার জন্য বিআইডব্লিউটিসি মেরিন বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক একে এম শাহাজাহানকে প্রধান করে ৪সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। কমিটিতে নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান, শিমুলিয়া ঘাটের এজিএম (মেরিন) আহমেদ আলী ও মাঝিকান্দি ঘাটের ব্যবস্থাপক মো: সালাউদ্দিনকে সদস্য করা হয়েছে।