মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার বরাইদ ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহত মালেকার মা জীবননেছা বাদী হয়ে সাটুরিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করছেন সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম ।
জানা যায়, গোপালপুর গ্রামের মোঃ জব্বার আলীর মেয়ে মালেকা আক্তারের সাথে একই গ্রামের শহীদের ছেলে মো. ফেরদৌস হোসেনের ৭ বছর আগে বিয়ে হয়। মধ্যবর্তী সময়ে মালেকার স্বামী ফেরদৌস হোসেন তিল্লিচর এলাকার পিংকি নামে এক মেয়ের সাথে পরকীয়া লিপ্ত হয়ে তাকে বিয়ে করেন। দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকে সে প্রথম স্ত্রীকে প্রায়ই মারধর করত বলে অভিযোগ রয়েছে।
একপর্যায়ে সে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেন। পরে স্থানীয়ভাবে আপোষ মিমাংশারমাধ্যমে প্রথম স্ত্রীর কাছ থেকে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে পুনরায় প্রথম স্ত্রীকে বিবাহ করেন।
এরই মধ্যে চতুর ফেরদৌস, দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক না দিয়ে প্রথম স্ত্রীর সাথে কারণ-অকারণে প্রতিনিয়ত ঝগড়ায় মেতে উঠে। ঘটনার রাত মঙ্গলবার মালেকা ও ফেরদৌসের সাথে পরকীয়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হলে ৫ মাসের অন্তঃসত্তা স্ত্রীকে পেটের মধ্যে লাথি ও গালায় আঘাত করে। একপর্যায়ে মালেকা অসুস্থ্য হয়ে পড়লে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আক্কাছ আলীকে ডেকে আনলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করলে ফেরদৌস রাতেই পালিয়ে যায়।
মালেকার বাবা মো. জব্বার আলী জানান, তার মেয়ের জামাই ফেরদৌস হোসেন তিল্লিচর এলাকার পিংকি নামে এক মেয়ের সাথে পরকীয়া ছিল। এ পরকীয়া নিয়ে মেয়ে মালেকার সাথে জামাই ফেরদৌসের সাথে প্রতিদিনই ঝগড়া হতো। দুইমাস আগে পিংকিকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা যৌতুক নেয় জামাই। তিনি অভিয়োগ করে বলেন, পিংকির পরামর্শে ফেরদৌস আমার মেয়েকে হত্যা করেছে বলে দাবী করেন তিনি।
সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তর জন্য মানিকগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে নিহত মালেকার মা জীবননেছা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আসামীকে দ্রুত গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলছে।