শীত আসছে, ভ্রাম্যমাণ শীতকালীন পিঠা বিক্রির ধুম !

0
442
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহঃ প্রকৃতিতে শীতল হাওয়া বইতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে ঝিনাইদহ শহরের বিভিন্ন স্থানে রাস্তার মোড়ে গড়ে উঠেছে ভ্রাম্যমাণ শীতকালীন পিঠার দোকান। বিকাল থেকে এসব দোকানে পিঠার স্বাদ নিতে ভিড় জমছে মানুষের। বিক্রেতারা পিঠা তৈরি করছেন আর ক্রেতারা দাঁড়িয়ে বা বসে বসে গরম গরম এসব শীতের পিঠার স্বাদ নিচ্ছেন। এ যেন শীতের আরেক আমেজ।
ঝিনাইদহ শহর ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন মোড়ে ও পাড়া-মহলস্নায় স্বল্প আয়ের লোকজন গড়ে তুলেছেন পিঠার দোকান। পৌর শহরের মডার্ন মোড়, পুরাতন মাগুরা বাসস্ট্যান্ড, টার্মিনাল এলাকা, পোস্ট ১ অফিস, পাইরা চত্বর, কলেজ মোড়, হাটের রাস্তা এলাকায় এসব পিঠার দোকান রয়েছে।
মূলত সেখানে ভাপা ও চিতই পিঠা তৈরি হচ্ছে। রিকশাচালক, দিনমজুর, শিশু-কিশোর, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী সব শ্রেণি-পেশার মানুষ পিঠার দোকানের ক্রেতা। কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে অনেককে আবার পিঠা খেতে দেখা যায়। অনেকে আবার পরিবারের সদস্যদের জন্য পছন্দের পিঠা নিয়ে যাচ্ছেন। পিঠা বিক্রেতা আশরাফুর ইসলাম
শহরের পাইরা চত্বর মোড়ে চালের গুঁড়া, ভর্তা আর পস্নাস্টিকের পিরিচ সাজাতে ব্যস্ত। এরপর গরম কড়াইয়ে চালের গোলা দিয়ে ঢেকে দেন। পিঠাটি খাওয়ার উপযোগী হতে কিছু সময় লাগে। এরই মধ্যেই ক্রেতার ভিড় জমে যায় তার দোকানে।
পত্রিকায় ঢাকা পিরিচে পিঠা নেন ব্যবসায়ী ইসমাইল ইসলাম। তিনি পিঠার কোনা ভেঙে ভর্তা মিশিয়ে মুখে পুরে বলেন, ছোটবেলার একটা সুখকর স্মৃতি হচ্ছে শীতের সকালে চুলার পাশে বসে ঝোলা গুড় মিশিয়ে চিতই পিঠা খাওয়া।
গ্রাম থেকে শহরে এসে পিঠার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নানা ভর্তা। তিনি জানান, যেহেতু এটা শীত মৌসুম বাসাবাড়িতে তো পিঠা বানায় সেটার একটা স্বাদ আর এখানকার পিঠার মধ্যে স্বাদের বেশ পার্থক্য। বাসাবাড়ির পিঠায় সাধারণত আইটেমটা কম থাকে।
আর এখানে যে পিঠা তৈরি হয় বিশেষ করে এখানকার ভর্তার আইটেমটা অসাধারণ, চার-পাঁচটা আইটেমের ভর্তা থাকে সবগুলোই আলাদা আলাদা সাধের সবকিছু মিলে এখানে বসে পিঠা খাওয়ার চমৎকার একটা পরিবেশ মনে হয়।
আরেকজন সালাম মিয়া জানান, বাসাবাড়িতে পিঠা বানানো বেশ ঝামেলার। খেতেও তো ইচ্ছে। তাই কী আর করা। দোকান থেকেই কিনে খাই। পথচারী রফিক উদ্দিন জানান, তিনি প্রতিদিন সন্ধ্যায় বাসায় ফেরার পথে দুটি চিতই পিঠা খান।
পুরো শীতকাল সন্ধ্যার নাশতা পিঠা দিয়েই সারেন। পাশ থেকে আরেকজন বলেন, ঘরে পিঠা বানানোর রীতি উঠে যাচ্ছে। সেটা পুষিয়ে দেয় রাস্তার পাশের এই দোকানগুলো।
পিঠা বিক্রেতা আশরাফুল ইসলাম জানান, এবার শীত শুরু হাওয়ার আগেই প্রচুর পিঠা বিক্রি হচ্ছে। বিকাল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পিঠা বিক্রি হয়। তবে রাতে পিঠার চাহিদা বেড়ে যায়। তাই আয়ও এবার একটু বেশি হচ্ছে। প্রতিদিন ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা লাভ হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here