শরীয়তপুর বাস মালিক-শ্রমিক বেপরোয়া, নির্যাতনের শিকার যাত্রি

0
114

 

শরীয়তপুর প্রতিনিধি ॥ দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর যাবত শরীয়তপুরবাসী বাস মালিক ও শ্রমিকদের কাজে জিম্মি হয়ে আছে। প্রত্যাশা ছিল স্বপ্নের পদ্মাসেতু চালু হলে ভিন্ন জেলার বাস এই জেলায় প্রবেশ করবে তখন হয়তো এই জিম্মিদশা থেকে মুক্তি মিলবে শরীয়তপুরবাসীর। স্বপ্নের পদ্মাসেতু চালু হয়েছে গত ২৫ জুন।

এরপর থেকে জিম্মিদশা-ভোগান্তি ও যাত্রিদের উপর নির্যাতন বেড়েছে অনেকগুন। নির্যাতনকারী এরা কারা? তাদের অবৈধ ক্ষমতার উৎস কি? এই নিয়ে নানাবিধ প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সাধারণ মানুষ ও নির্যাতিতদের মনে। বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।

জানাগেছে, গত ২৬ জুন থেকে পদ্মাসেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। সেই দিন ঢাকার ফুলবাড়িয়া বিআরটিসি বাস টার্মিনাল থেকে যে কয়টি বাস ছেড়ে আসে তার সবকয়টি শরীয়তপুর জেলা বাস মালিক ও শ্রমিকের হাতে আটকা পড়ে। বাস মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সাথে সমঝোতা করে এখন বিআরটিসি বাস চলছে ঢাকা-শরীয়তপুর সড়কে। যারা রাষ্ট্র মালিকানা বাস আটক করতে পারে নিঃসন্দেহে তাদের ক্ষমতা আকাশ ছোঁয়া।

আরো জানাগেছে, শরীয়তপুর থেকে ঢাকার দূরত্ব ৭২ কিলোমিটার। এই রুটের যাত্রিদের বাস ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ২১৮ টাকা। কিন্তু বাস মালিক ও তাদের নিয়োগকৃত শ্রমিক সরকারের এই সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ। তাহলে এরা কী চায়? এর উত্তর জানা দরকার আমজনতার।

৭ জুলাই বৃহস্পতিবার যাত্রিরা শরীয়তপুর পরিবহন নামক (ঢাকা মেট্রো- ব ১৫-৭৯৩৬) গাড়িটি কমলাপুর থেকে ছেড়ে আসে। সেখানে ২১৮ টাকার স্থলে যাত্রিদের কাছ থেকে ৩০০ টাকা ভাড়া আদায় করে টিকিট কাউন্টারে দায়িত্বে থাকা সাদ্দাম হোসেন। তখন কয়েকজন যাত্রি বেশী ভাড়া আদায়ে প্রতিবাদ করে। সেই গাড়িতে ছিলেন এটিএন বাংলা টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার ও বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার শরীয়তপুর প্রতিনিধি এবং শরীয়তপুর ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া জার্ণালিষ্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি রোকনুজ্জামান পারভেজ ও তার ছেলে। তখন সেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে প্রতিবাদ জানায়। সেই সময় কাউন্টার ইনচার্জ সাদ্দাম হোসেন ও তার সহযোগীরা প্রতিবাদী যাত্রিদের টেনেহিছড়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর করে।

পরবর্তীতে গাড়িটি যখন শরীয়তপুরের কাজীর হাট এলাকায় আসে তখন গাড়িটি থামিয়ে হয়রানী ও নির্যাতনে শিকার যাত্রিদের সাথে কথা বলেন সাংবাদিকরা। ঘটনার সত্যতা থাকায় সাংবাদিকদের সামনেই বিক্ষুব্ধ যাত্রিার গাড়িটি আটক করেন।

নির্যাতনে শিকার সাংবাদিক রোকনুজ্জামান পারভেজ বলেন, নির্ধারিত ভাড়ার চাইতে বেশী ভাড়া আদায় করায় যাত্রিদের সাথে বাস শ্রমিকদের কথা কাটাকাটি চলছিল। যাত্রি হিসেবে আমিও প্রতিবাদ জানাই। তখন সাদ্দামের নেতৃত্বে সকল বাস শ্রমিকরা আমাদের উপর হামলা চালায়। আমার গায়ের জামাও ছিড়ে ফেলে।

এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ পায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। প্রিন্স রাজিব আহমেদ নামে একটি আইডি থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে লিখেছে, ‘ওরা এতো বড় সাহস কোথায় পায়’? হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও দাবি জানায় সে।

আসাদ গাজী নামে অপর আইডি থেকে লিখেছেন, শরীয়তপুর পরিবহনের স্টাফদের হামলার শিকার যাত্রী ও এটিএন বাংলার সিনিয়র সাংবাদিক রোকনুজ্জামান পারভেজ ভাই। তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ সহ দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবীও জানায় সে।

নয়ন দাস লিখেছেন, তীব্র নিন্দা ও প্রদিবাদ জানাই। দোষীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসান বলেছেন, যাত্রি হযরানী বা অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে কোন অভিযোগ থাকলে উপ-কমিটির কাছে অভিযোগ কররতে হবে। অভিযোগ প্রমানিত হলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here