কিছু পরিচালক থাকেন যাঁর ছবি দেখার জন্য অপেক্ষা করে থাকি। অনুরাগ কাশ্যপ তাঁদের মধ্যে একজন। অরিও পাওলোর স্প্যানিশ ছবি মিরাজ-এর অবলম্বনে তৈরি দোবারা। পরিচালক অনুরাগ অবশ্য বলেছেন তিনি মিরাজ-এর স্ক্রিপ্ট নির্ভর করেই দোবারা তৈরি করেছিলেন, মূল ছবিটা দেখার আগেই।
‘বার বার দেখো’, অ্যা-কশন রিপ্লে কিংবা ফানটুস-এর মতো হিন্দি ছবিতে ‘টাইম ট্র্যাভেল দেখা গেলেও বলিউডে এর আগে প্যারালাল ইউনিভার্স নিয়ে কোনও ছবি দেখেছি বলে মনে পড়ে না। হলিউডে যদিও প্যারালাল ইউনিভার্স নিয়ে অনেক কাজ হয়েছে। এবং দোবার ছবিতে অন্যতম চরিত্র ‘অনয়-এর মুখে বারবার শুনি টার্মিনেটর ছবির কথা।
অনয়ের মতো আমরা অনেকেই স্কুলে থাকতে টার্মিনেটর ফ্র্যাঞ্চাইজির ভক্ত ছিলাম। তবে মনে রাখতে হবে ইতিমধ্যেই নেটফ্লিক্স-এর দৌলতে ‘টাইম ট্র্যাভেল এবং প্যারালাল ইউনিভার্স নিয়ে সবচেয়ে আলোচিত এবং জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজ ডার্ক দেখে ফেলেছি।
তার আগে অবশ্যই নোলানের ইনসেপশন ইন্টারস্টেলার-এ আমরা ‘টাইম এবং স্পেস-এর জটিল সমন্বয় দেখেছি আমরা। দোবার ছবিতে কাশ্যপ ক্রিস্টোফার নোলানকেও ট্রিবিউট জানিয়েছেন।এবার আসা যাক ‘দোবারা’য়। ছবির সময়কাল ১৯৯৬, প্রেক্ষাপট পুণের একটি শহর।
সেখানকার বাসিন্দা দশ-বারো বছরের ছেলে অনয় প্রচণ্ড জল ঝড়ের রাতে পাশের বাড়িতে চেঁচামেচির আওয়াজ শুনে কৌতুহলি হয়ে দেখতে গিয়ে বাড়ি ফেরার পথে, ট্রাকে ধাক্কা খেয়ে মারা যায়। এর প্রায় পঁচিশ বছর পর অন্তরাকে (তাপসী) তার স্বামী বিকাশ (রাহুল ভট্ট) এবং তাদের মেয়ে অভন্তির সঙ্গে দেখি। তাদের নতুন বাড়ির পুরনো ইতিহাস অন্তরা জানতে পারে বন্ধু অভিষেকের কাছ থেকে।
এবং ইন্টারনেট থেকে আরও তথ্য সংগ্রহ করে। এই বাড়িতেই অনয়ের ভিডিও রেকর্ডার এবং অ্যান্টেনা দেওয়া টিভিতে সব রেকর্ড করা থাকত। মারা যাওয়ার দিনও অনয় রেকর্ডিং করতে করতে উঠে যায়। সেই টিভি-রেকর্ডার সেট খুঁজে পায় অন্তরা এবং বিকাশ। ঘুম না এলে, গভীর রাতে অন্তরা সেই টিভি অন করে, উল্টো দিকে অনয়কে দেখতে পায়। এবং তাকে বাইরে বেরতে বারণ করে, তার আগাম মৃত্যুর খবর জানিয়ে।
সেই পুরনো টাইম জোনে অনয় বেঁচে যায়, কিন্তু হুশ ফিরলে অন্তরা অন্য এক টাইম জোনে জেগে ওঠে যেখানে এক তরুণ পুলিশ অফিসার (পাভেল গুলাটি) ছাড়া তার কথা কেউ বিশ্বাস করে না। অন্তরা তার মেয়েকে ফিরে পেতে চায়, এবং অনয় যে মার্ডার দেখে ফেলেছিল তারও সমাধানে কৌতূহলি হয়। (সংবাদ প্রতিদিন-কলিকাতা)