পরিবেশ বান্ধব শিল্প কারখানা হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও তারাসিমা এ্যাপা-রেলস লিমিটেডের বিরুদ্ধে রয়েছে মারাত্বক পরিবেশ দূষণের অভিয়োগ। কারখানাটি গাজীখালি নদীতে দূষিত পানি ফেলে পরিবেশ দূষণ করছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের নমুনা পরীক্ষায়ও দূষণের প্রমাণ মিলেছে। প্রমাণ পেয়ে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নোটিস দেওয়া হয়েছে। তারপর আর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি মানিকগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তর।
সেই সাথে অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণকারী সরকারি প্রতিষ্ঠানেরও দূষণরোধে নেই দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০২৩ সালে ২ ফেব্রয়ারি তারাসিমার বিরুদ্ধে গাজীখালি নদী দূষণের অভিযোগ ওঠে। মানিকগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তর মার্চ মাসের ৩ তারিখে প্রতিষ্ঠানটির ইটিপির আউটলেট ও গাজীখালি নদীতে পরিশোধিত তরল বর্জ্যের নির্গতমুখ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে। ওই দিনই সংগ্রহ করা নমুনা পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের ঢাকা গবেষণাগারে পাঠানো হয়।
ওই নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া যায় এপ্রিল মাসের ৪ তারিখে। নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে দূষণের প্রমাণ মেলে। ইটিপির আউটলেট ও গাজীখালি নদীর নির্গমণমুখে বিওডি, সিওডি ও টিডিএস-এর মানমাত্রার মধ্যে সামঞ্জ্য সতা নেই বলে প্রমাণ হয়।
মানিকগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তর তারাসিমা এ্যাপারেলস লিমিটেডকে এবিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়। পরে মে মাসের ৩ তারিখে প্রতিষ্ঠানটি লিখিত জবাব দাখিল করে। লিখিত জবাব পেয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এলাকাবাসী জানায়, তারাসিমা কারখানাটি শুরুর পর থেকে গাজীখালি নদী মরতে শুরু করে। আগে এ পানিতে গোসল করা, বাড়ির কাজে ব্যবহার করা গেলেও এখন আর ব্যবহার করা যায় না। এ পানি ব্যবহার করলে নানা ধরনের অসুখ হয়। বর্ষাকালে পানি একটু পরিষ্কার থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে পানি কালো হয়ে যায়।
তারাসিমা এ্যাপারেলস লিমিটেডের উপ-মহাব্যবস্থাপক (কমপ্লায়েন্স) কামরুজ্জামান বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটি সূচনা লগ্ন থেকে পরিবেশের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়ারোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। দেশের সকল প্রচলিত আইন মেনে কারখানাটি পরিচালিত হচ্ছে।’
মানিকগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. ইউসুফ আলী বলেন, ‘গত বছর তারাসিমার বিরুদ্ধে নদী দূষণের প্রমাণ পাওয়ার পর নোটিস করা হয়েছে।
এ বছর সবশেষ নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে কারখানা টিতে দূষণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তাই ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’ গত বছর দূষণের প্রমাণ পেয়ে শুধু নোটিস করা হলো, আর কোনো ব্যবস্থা কেন নেওয়া হয়নি- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এ দপ্তরের এর চেয়ে বেশি কিছু করার নেই।