শরীয়তপুর প্রতিনিধি ॥ শরীয়তপুর-ঢাকা যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম কোটাপাড়া কীর্তিনাশা নদীর পুরাতন সেতু। জরাজীর্ণ, বিপদ জনক, ক্ষতিগ্রস্থ সরু সেতুটি হালকা যান চলাচলের জন্য খোলা রাখা হয়েছে। বাস-ট্রাক-লড়ি ও কাভার্ড ভ্যান চলাচল নিষিদ্ধ করে সড়কের পাশে নোটিশ ঝুঁলিয়ে রেখেছে শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষ। বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতু দিয়েই চলছে হাজার হাজার যানবাহন। নোটিশ ঝুঁলিয়ে দিয়েই দায় এড়ানো যাবেনা বলে দাবী করেছেন জেলা বাস মালিক সমিতি।
শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ, বাস মালিক সমিতি, যাত্রি ও গাড়ি চালক সূত্র জানায়, প্রায় ৩৫ বছর পূর্বে সদর উপজেলার কোটাপাড়া এলাকায় কীর্তিনাশা নদীর উপর সময়ের চাহিদা অনুসারে এলজিইডি এই সেতুটি নির্মাণ করেন। তখন রিক্সা-ভ্যান সহ হালকা যান চলাচল করতো এই সেতু দিয়ে। ইতোমধ্যে জেলার রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হয়ে যান চলাচল বৃদ্ধি পেলেও এই সেতুর কোন পরিবর্তণ হয়নি। গত মাসে পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ায় অনেক ভারী যান প্রবেশ করে এই জেলায়। যে কোন মূহুর্তে সেতুটি ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কায় সড়ক কর্তৃপক্ষ ভারী যান চলাচল নিষিদ্ধ করেছেন।
ঝুঁকিপূর্ণ সেতুতে যানজটে আটকে পড়া শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস বাসের চালক আনোয়ার বাংলা টপ নিউজকে জানায়, বাস নিয়ে যখন সেতুতে উঠি তখন সেতু দু’দিকে দুলতে থাকে। যেকোন সময় সেতুটি ভেঙ্গে পড়তে পারে। বিকল্প কোন ব্যবস্থা থাকলে এই সেতুতে কখনই উঠতাম না।
শরীয়তপুর বাস মালিক সমিতির সভাপতি ফারুক আহম্মদ তালুকদার বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার সাথে সাথে মানুষের উৎসাহ উদ্দিপণা বেড়েই চলছে। যাত্রিদের চাহিদা অনুযায়ী এখন শতাধিক বাস শরীয়তপুর-ঢাকা রুটে চলছে। অনেক সময় বিআরটিসির দোতলা বাসও আসে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ বিকল্প কোন ব্যবস্থা না করে কোটাপাড়া সেতুটি যান চলাচলের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতুতে বড় ধরণের কোন দুর্ঘটনা ঘটলে নোটিশ দিয়েই তার দায় এড়াতে পারবেনা সড়ক বিভাগ।
শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ভূই রেদওয়ানুর রহমান বাংলাটপ নিউজকে বলেন, কোটাপাড়া কীর্তিনাশা নদীর সেতুটি অনেক পুরনো। সেতুটি যান চলাচলের উপযোগী না। তাই দুই বছর পূর্বে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এই সেতুটি নির্মাণ কাজ শুরু করি। যথা সময়ে অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় সেতু নির্মাণ সময়সীমা গত জুন মাসে শেষ হয়ে যায়। সময় বর্ধিত করে সেতু নির্মাণ করতে আরো প্রায় দুই বছর সময় লাগতে পারে।
ইতোমধ্যে বিভাগীয় অফিস থেকে পর্যবেক্ষণ টিম এসেছিলেন। বিষয়টি জেলা প্রশাসনের মিটিংয়েও উপস্থাপন করেছি। এখন তাদের পরামর্শে সেতুতে ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করেছি। আগামী শুকনো মৌসুমে বিকল্প বেইলী সেতুর ব্যবস্থা করা হবে। এখন পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা প্রয়োজন। তারা যেন একই সাথে একাধিক যান সেতুতে উঠতে না দেন। তাহলে ঝুঁকি অনেকটা কমে যাবে।