শরীয়তপুর প্রতিনিধি ॥ চাঁদা আদায়, বাড়ি ঘরে আগুন, সামাজিক অনুষ্ঠান পন্ড, খাবার নষ্ট করা ও নারীদের যৌন হয়রানী আওয়ামীলীগ সরকার পালিয়ে যাওয়ার এক বছরেও থামেনি শরীয়তপুরের গোসাইর হাট উপজেলার কুচাইপট্টি ইউনিয়নের কোলচোরি পাতারচর গ্রামে। সেই গ্রামের নারীরা রয়েছে সন্ত্রাসীদের টার্গেটে।
অত্যাচার নিপিড়নের শিকার হয়ে কোন নারী বিচার চাইতে গেলে তাকে রত্রি যাপনের প্রস্তাব পেতে হয়েছে সমাজপতির কাছ থেকে। তাদের কথায় রাজী না হওয়ায়া অনেক নারী এলাকা ছাড়া হয়েছেন।
পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদী থেকে বালু উত্তোল করে গ্রামটি ভাঙ্গন ঝুকিতে ফেলাছে চক্রটি। এনম অনেক অভিযোগ এনে রোববার দুপুর ১২টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন করেছে কোলচোরি পাতারচর গ্রামবাসী।
মানববন্ধনকারীরা জানায়, শরীয়তপুর ও বরিশাল জেলার সীমান্ত এলাকায় কোলচোরি পাতারচর গ্রাম। সেই গ্রামে নির্যাতন ও জুলুম করে স্বেচ্ছাসেককলীগ নেতা সোহেল বেপারী, তার ভাই আওয়ামীলীগ নেতা মোসলেম বেপারী, ডাকাত সরদার মিজান বেপারী ও মাদক স¤্রাট শামীম বেপারীরা। তারা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন, চাঁদাবাজি, নারী নির্যাতন করে থাকে। তাদের অত্যাচারে অনেকে বসত ভিটা বিক্রি করে ঢাকা চলে গেছেন।
ভুক্তভোগী এক নারী জানায়, এলাকায় সন্ত্রাসীদের একটি চক্র রয়েছে। তারা গ্রামবাসীদের নানা ভাবে অত্যাচার করে। সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সমাজ পতির কাছে নালিশ নিয়ে যাই। তখন সমাজ পতি জানায় তার সাথে রাত্রি যাপন করলে সঠিক বিচার করবে। আমরা মান ইজ্জতের ভয়ে সমাজপতির কথায় রাজি হইনি। পরে আমার ও আমার পরিবারের উপর নির্যাতন বেড়ে যায়। তাই বাড়ি-ঘর বিক্রি করে ঢাকায় চলে যাই।
ওই গ্রামের ছাত্তার মাতুব্বরের ছেলে মহিউদ্দিন মাতুব্বর জানায়, এই সন্ত্রাসীরা এলাকায়, এরা বিগত সরকারের ১৬ বছর শাসনামলে চুরি-ডাকাতি, মাদক বিক্রি, নারী নির্যাতন করতো। এখনও তারা দাপটের সাথে সেই অন্যায় অত্যাচর করতেছে। তার সাথে যোগ করেছে নদী থেকে বালু উত্তোলন। এই বালু উত্তোলনের কারেণ কোলচুরি পাতারচর গ্রাম ভাঙ্গন ঝুকিতে রয়েছে।
মুক্তিযোদধা মালেক মুন্সি মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে জানায়, তার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা চাঁদা চাওয়া হয়। চাঁদা দিতে না পারায় তার গোয়াল থেকে গরু নিয়ে গেছে সন্ত্রাসীরা। এ ছাড়াও অনেক ক্ষয়ক্ষতি করেছে তার।
নদী ভাঙ্গন কবলিত ইসমাইল বেপারী জানায়, নদীতে তার বাড়ি ভেঙ্গে যাওয়ায় সে কোলচোরি পাতারচর গ্রামে জমি ক্রয় করে বাড় করে। সেখানে সন্ত্রাসীর তাকে ও তার পরিবারকে অত্যাচার করে। অত্যাচর সহ্য করতে না পেরে বাড়ি বিক্রি করে দেয়।
সংবাদ পেয়ে সন্ত্রাসীরা তার চোখ-মুখ বেঁধে বিলে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে হত্যার হুমকি দেয় ১ লাখ টাকা চাঁদা চায় সন্ত্রাসীরা। জীবন বাঁচাতে টাকা দিতে রাজি হয় সে। পরে সন্ত্রাসীদের টাকা দিয়ে সপরিবারে ঢাকায় চলে যায় সে।