মানিকগঞ্জের সিংগাইরে চান্দহর বাজারে একটি বিরোধপূর্ণ জমির দখল নিতে রাতের আঁধারে একটি দোকানের সাটার বন্ধ করে বালু ফেলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করা ব্যবসায়ীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। গত ৩০ জুন গভীর রাতে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়।
ভুক্তভোগী দোকান মালিক প্রবাসী রবিউল ইসলাম খান মুঠোফোনে জানিয়েছেন, জমিটি তিনি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন এবং প্রায় ২৫ বছর ধরে সেখানে দোকান নির্মাণ করে ব্যবসা করছেন ও জমি ভোগদখল করছেন। এই জমি নিয়ে আদালতে একটি মামলাও চলমান আছে। তিনি আরও জানান, এর আগে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সালিশি বৈঠক হলেও কোনো সমাধান হয়নি। সর্বশেষ, গত ৩০ জুন রাতে বিপক্ষের লোকজন দোকানের সামনে ট্রাকভর্তি বালু ফেলে দোকান বন্ধ করে দেন। ভাড়াটিয়ারা বালু সরানোর কথা বললে মনির সরদার ক্ষতি করার হুমকি দেন। এই হয়রানির সুষ্ঠু বিচার ও সমাধান চেয়েছেন তিনি।
রবিউলের স্ত্রী শারমিন আক্তার জানান, তার স্বামী প্রবাসে থাকায় তিনি বাদী হয়ে শান্তিপুর তদন্ত কেন্দ্রে অভিযোগ করেছেন, কিন্তু পুলিশ কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
ভুক্তভোগী ভাড়াটিয়া ব্যবসায়ীরা বলেন, তারা রবিউল ইসলামের কাছ থেকে দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করেন। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকেই মনির সরদার তাদের দোকান ছেড়ে দেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছেন। মঙ্গলবার সকালে দোকানে এসে তারা দেখেন, রাতের আঁধারে বালু ফেলে দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাদের দোকানের ভেতরে প্রয়োজনীয় ও মূল্যবান মালামাল আটকা পড়েছে, যা তারা বের করতে পারছেন না। তারা এই জোর করে রাস্তা বন্ধ করে ব্যবসা দখলের চেষ্টা মেনে না নেওয়ার কথা জানিয়ে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিযুক্ত মনির সরদারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। তার শাশুড়ি রহিমা বেগম বালু ফেলার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছেন, “জমিটি আমাদের। রবিউল আওয়ামী লীগের ক্ষমতার দাপটে এতদিন জবরদখল করে রেখেছিল। এখন আমরা আমাদের জমি দখলে নেব। জমি নিয়ে আদালতে মামলা হয়েছে। আদালত যে রায় দেবেন, আমরা সেটাই মেনে নেব।”
এই ঘটনায় দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ এবং আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে শান্তিপুর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ বাসুদেব সিনহা বলেছেন, অভিযোগ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন এবং বালু সরিয়ে নিতে বলা হয়েছিল। পরে জানতে পারেন, এখনো বালু সরানো হয়নি। তিনি জানান, এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।