শরীয়তপুর প্রতিনিধি ॥ শরীয়তপুর সদর উপাজেলার শৌলপাড়ায় চাঁদার টাকা না পেয়ে প্রতিবন্ধীর জমি দখল করে রাখার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী ইদ্রিস বেপারী নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগ করেছে প্রতিবন্ধী প্রতিবেশি বিএম জসিম ও তার পরিবার। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বররসহ শালিশগণ তিন মাসের মধ্যে প্রতিবন্ধীর জমি দখলমুক্ত করেদিতে সিদ্ধান্ত দেয়। সেই থেকে ১ বছর পার হলেও তা মানতে নারাজ চাঁদাবাজ ইদ্রিস বেপারী। ইদ্রিস বেপারীর বৈধ কোন আয়-রোজগার না থাকলেও এলাকায় চাঁদাবাজী করে দিব্যি প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। তার সাথে প্রভাবশালী নেতাদের সখ্যতাও রয়েছে বলে তিনি দাবী করেছেন।
চাঁদার টাকা দিতে না পারায় দীর্ঘদিনেও দখলকৃত জমি মুক্ত করতে পারছে না প্রতিবন্ধী বিএম জসিম। স্থানীয় শালিশী ও চেয়ারম্যানের নির্দেশ উপেক্ষা করা এবং চাঁদা ব্যতিত জমি দখল মুক্ত করতে না পারায় জেলা প্রশাসন সহ পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা কামনা করছেন ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারটি।
ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর সদর উপজেলার শৌলপাড়া মৌজার ৪২৫ নং দাগে প্রতিবন্ধী বিএম জসিমের ১৮ শতাংশ জমি রয়েছে। সেই জমির একটা অংশ প্রতিবেশী প্রভাবশালী ইদ্রিস বেপারী দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রেখেছে। অনেক মাপামাপি ও শালিশী হয়েছে। উদ্রিস তার দাবীকৃত টাকা না পেলে জমি দখলমুক্ত করবে না।
তারা আরো জানায়, জসিম প্রায় ৩ বছর পূর্বে ইউপি মেম্বার দুলাল মোল্যা, শালিশকারী আজগর মুন্সী, মিন্টু খানসহ স্থানী গণ্যমান্যদের কাছে যায়। তারা জমি দখলমুক্ত করতে সিদ্ধান্ত দেয়। তার পরেও ইদ্রিস বেপারী কাঙ্খিত চাঁদা না পেলে জমি ফিরিয়ে দিবে না বলে জানিয়েছে। পরে প্রতিবন্ধী বিএম জসিম স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ভাষানীর স্মরনাপন্ন হয়। চেয়ারম্যান ১ বছর পূর্বে ইদ্রিসকে প্রতিবন্ধী জসিমের জমি ৩ মাসের মধ্যে দখলমুক্ত করতে বলেন। বছর পার হয়ে গেলেও অদ্যবধি সে প্রতিবন্ধীর জমি দখলমুক্ত করেনি।
এই বিষয়ে টাকা দাবী করা ইদ্রিস বেপারী জানায়, জেলার বড় বড় নেতা, চেয়াম্যান ও ঢাকার আইনজীবীদের সাথে তার সখ্যতা রয়েছে। সে কাঙ্খিত টাকা না পেলে জমি দখলমুক্ত করবেন না।
শালীশ মীমাংসাকারী আতাউর রহমান তালুকদার বলেন, বিএম জসিম ও ইদ্রিসের শ্বশুর পরিবারের মধ্যে একটা আর্থিক লেনদেন ছিল। সেই বিষয়ে আদালতে মামলা হয়। দাবীকৃত সমুদয় টাকা পেয়ে বাদী সেই মামলা তুলে নেয়। বর্তমানে জসিমের সাথে ইদ্রিসের কোন বিরোধ থাকার কথা না। কেন ইদ্রিস জমির দখল ছাড়ে না তা জানি না।
ক্ষতিগ্রস্থ ও প্রতিবন্ধী বিএম জসিম বলেন, আমি প্রতিবন্ধী হওয়ায় সরকারী ভাতা খাই। ইদ্রিস চাঁদার জন্য আমার জমি দখল করে রেখেছে। চাঁদা না দিলে জমির দখল ছাড়বে না বলে জানিয়েছে। আমি কোন উপায় না দেখে চেয়ারম্যান-মেম্বার ও স্থানীয় শালিশদের কাছে যাই। ইদ্রিস তাদের মানতে নারাজ। এখন ভাবছি আইন আদালত ও প্রশাসনের কাছে যাবো। ইদ্রিসের বৈধ কোন রোজগারের পথ না থাকায় চাঁদাবজী করে চলে। এলাকায় সবাই জানে। এবার আমি তার খপ্পরে পড়েছি।
এই বিষয়ে স্থানীয় মেম্বার দুলাল মোল্যা জানায়, আমরা শালিশী করে বিষয়টি মীমাংসা করি। সীমানা পিলারও স্থাপন করে দেই। প্রায় তিন বছর অতিবাহিত হতে চলছে এখনও ইদ্রিস বেপারী জসিমের জমির দখল ছাড়ছে না।
শৌলপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান খান ভাষানী জানায়, বছর খানেক পূর্বে প্রতিবন্ধী জসিম আমার পরিষদে এসে ইদ্রিসের বিরুদ্ধে বিচার দেয়। পরে উভয় পক্ষদের ডেকে সামনাসামনি করি। তাদের কথা শুনি। জসিমের জমি থেকে ৩ মাসের মধ্যে ইদ্রিসের রান্নাঘর ও টয়লেট সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেই। বছর পাড় হয়ে গেলেও ইদ্রিস তা সরিয়ে নেয়নি। কেন সরিয়ে নেয় না ইদ্রিসকে ডেকে তা জানতে চাইব।