চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ চাঁপাইনবাবগঞ্জের কিরনগঞ্জ সীমান্তে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয়দের আম গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট জটিলতা বিজিবি-বিএসএফ এর পতাকা বৈঠকের পর রবিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্ত এলাকায় স্বাভাবিক ভাবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরের সীমান্তবর্তী এলাকায় কৃষকদের কাজ করতে দেখা গেছে।
তবে শনিবারে ভারতীয়দের হামলায় পাঁচ জন বাংলাদেশী আহত হয়েছে, ২০টি আম গাছ ও অর্ধশত বরই গাছ কেটে ফেলেছে ভারতীয়রা। এতে সাধারণ জনগণের মাঝে কিছু আতঙ্ক বিরাজ করছে। ৫৯ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া ও বিনাদপুর ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল আমিন শূন্যরেখায় না যেতে এবং পদদলিত করে ফসল নষ্ট না করতে জনসাধারণ কে সচেতনতার লক্ষ্যে স্থানীয়দের সাথে মতবিনিময় করছেন।
স্থানীয় কৃষক আব্দুস সালাম বলেন, আমরা গত ১৫ বছরে বি এসএফ এবং ভারতীয়দের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। বর্তমান সরকারের আমলে আমরা প্রতিবাদ করতে পারছি, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবসময় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবির পাশে রয়েছি আমরা। বিনাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বলেন, গতকালের (শনিবার) ঘটনায় বাংলাদেশের অনেক কৃষকের ফসল পদদলিত হয়ে নষ্ট হয়েছে।
আর যেন কোন ফসল নষ্ট না হয়, এজন্য জনসাধারণকে সচেতন করছি। ৫৯ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া জানান, আমাদের দৈনন্দিন সীমান্তের টহল কার্যক্রম সীমান্ত এলাকায় চলমান রয়েছে। সীমান্ত এলাকায় যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য বিজিবি প্রস্তুত রয়েছে।
উল্লেখ্য, শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের কিরণগঞ্জ সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ ও ভারতীয়রা বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে বাংলাদেশীদের আম গাছ কেটে নষ্ট করছিলো। পরে তাদের প্রতিরোধে বিজিবি এবং বাংলাদেশিরা একসাথে মোকাবিলার চেষ্টা করে। বিএসএফ বার বার টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে উত্তেজনা বৃদ্ধির চেষ্টা করে।
কিরণগঞ্জ সীমান্তে সীমন্তরেখা এলাকায় দু’দেশের গ্রামবাসীরদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। কিরণগঞ্জ সীমান্ত থেকে এ উত্তেজনা কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকে কেন্দ্র করে সেই চৌকা সীমান্তেও ছড়িয়ে পড়ে এবং সীমান্ত এলাকার ৩ কিলোমিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। দীর্ঘ সময় ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।
বাংলাদেশের জনগণকে লক্ষ্য করে হাত বোমা নিক্ষেপ করে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের সীমান্তবাসীরা লাঠি সোটা এবং হাসোয়া নিয়ে সীমান্ত অবস্থান করে। মহানন্দা ৫৯ বিজিবি ব্যাটেলিয়ান এর অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া সীমান্ত এলাকা পরিদর্শণ করেন এবং বি এসএফ’র সাথে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের জন্য পতাকা বৈঠক করেন।
বৈঠকে বিএসএফ গাছ কেটে নস্ট করার ঘটনা নিয়ে সৃষ্ট ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে। সন্ধার পূর্বেই উভয় দেশের সাধারণ মানুষকে সীমান্ত এলাকা থেকে সরিয়ে নেয়া হয়।