চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর
উপজেলার পারবতীপুর ইউনিয়নের এনায়েতপুর ও নজরপুর গ্রামের
মাঝামাঝি স্থানে পাঁকা রাস্তার উপর ডাকাতির ঘটনায় মূল পরিকল্পনা-কারীসহ আরো ৪ (চার) জন ডাকাত গ্রেফতার হয়েছে। এর মধ্যে ২ জন ডাকাত বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃকাঃবিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক
জবানবন্দী দিয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে, ডাকাতির ঘটনার মূল পরিকল্পনারকারী ও আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সরদার গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়ার বাবুপুর গ্রামের মৃত তহুরুল ইসলামের ছেলে মোঃ মানিক আলী (৩২), ডাকাত দলের অন্যতম সদস্য শিবগঞ্জ উপজেলার টোকনা গ্রামের মৃত সিকিম আলীর ছেলে মোঃ আলামিন (১৯), নাচোল উপজেলার খলসী সিন্দুর মুচি খাড়ী গ্রামের মোঃ একরামুল হক এর ছেলে মোঃ আব্দুল মাতেন @ মতিন (২৮) এবং একই উপজেলার বড়ীয়া মোজা গ্রামের মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মোঃ নাইম ইসলাম (২৭)।
জেলা পুলিশের এক প্রেসনোটে শুক্রবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। জেলা পুলিশের প্রেসনোটে জানানো হয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার পারবতীপুর ইউনিয়নের এনায়েতপুর ও নজরপুর গ্রামের মাঝামাঝি স্থানে পাঁকা রাস্তার উপর ডাকাতির ঘটনায় গোমস্তাপুর থানায় মামলা দায়ের হলে মামলার অজ্ঞাতনামা আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে বিভিন্ন তথ্য উপাত্তের সহায়তায় ঘটনার পর হতেই জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ডাকাতির সাথে সরাসরি অংশগ্রহণকারী ৭ জনকে ইতিপূর্বে গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তীতে এরই ধারাবাহিকতায় গত ১ এপ্রিল জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি চৌকস টিম ডাকাতির ঘটনার মূল পরিকল্পনারকারী ও আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সরদার গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়ার বাবুপুর গ্রামের মোঃ মানিক আলী, ডাকাত দলের অন্যতম সদস্য শিবগঞ্জ উপজেলার টোকনা গ্রামের মোঃ আলামিন, নাচোল উপজেলার খলসী সিন্দুর মুচি খাড়ী গ্রামের মোঃ আব্দুল মাতেন @ মতিন এবং একই উপজেলার বড়ীয়া মোজা গ্রামের মোঃ নাইম ইসলাম কে গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তীতে উক্ত গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নাচোলের মোঃ আব্দুল মাতেন @ মতিন এবং মোঃ নাইম ইসলাম কে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয় এবং ডাকাতির ঘটনার মূল পরিকল্পনারকারী ও আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সরদার গোমস্তাপুর মোঃ মানিক আলী, অন্যতম সদস্য শিবগঞ্জ উপজেলার গ্রামের মোঃ আলামিন কে রিমান্ডে এনে বিধি মোতাবেক নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা নিজেদের দোষ স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃকাঃবিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক জবান বন্দী প্রদান করে। উল্লেখ্য, উপরোক্ত আসামীদের বিরুদ্ধে চাঁপানবাব-গঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় একাধিক মামলা রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১১ মার্চ নাচোল থানার নূরপুর গ্রামের মৃত এসরাইল এর ছেলে অটোভ্যান চালক মোঃ রফিকুল ইসলাম (৪৯) সন্ধ্যা অনুমান ০৭.০০ ঘাটিকায় গোমস্তাপুর থানাধীন জগতগ্রাম বিয়ের বাড়ীতে রিজার্ভ ভাড়া যায়। বিয়ে বাড়ী থেকে নাচোল থানাধীন আঝইর গ্রামে ফেরার পথে সন্ধ্যা অনুমান সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে গোমস্তাপুর থানাধীন পারবর্তীপুর ইউনিয়নের এনায়েতপুর ও নজরপুর গ্রামের মাঝামাঝি একটি আম বাগানের সামনে পাঁকা রাস্তার উপর পৌঁছালে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত মুখে মাস্ক ও কালো কাপড় বাঁধা ০৮/১০ জন অজ্ঞাতনামা লোক পথরোধ করে তার ভ্যানে থাকা ৭ জন যাত্রীকে এলোপাথারি মারধর করে হাসুয়া, লাঠি, শিশু গাছের ডাল ঠেকিয়ে আরো মারপিট করে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক অটো চার্জার ভ্যান (পাঠলি গাড়ী), যার মূল্য অনুমান ২ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা ডাকাতি করে নেয় এবং ভ্যানে থাকা যাত্রীদের জিম্মি করে ঘটনাস্থল হতে অনুমান ৫০০ গজ দক্ষিণ পশ্চিমে আম বাগানের ভিতরে নিয়ে ভ্যানচালকের কাছে থাকা ৫’শ টাকা ও ০১টি স্মার্ট ফোন এবং ভ্যান যাত্রী মোঃ মাজেদ আলীর নগদ ৩৬০০/-টাকা, ০১টি বাটন মোবাইল ফোন, মোসাঃ মর্জিনা বেগম এর কানে থাকা একজোড়া স্বর্ণের দুল ও ০১টি লাকফুল, যার ওজন ৪ আনা, ০১টি বাটন মোবাইল ফোন, নগদ টাকা, মোসাঃ সামিরা খাতুন এর কানে থাকা একজোড়া স্বর্ণের দুল ও একটি নাকফুল, যার ওজন ৪ আনা, ০১টি বাটন মোবাইল ফোন, মোসাঃ রেখা বেগম এর কানে থাকা একজোড়া স্বর্ণের দুল ও একটি নাকফুল, যার ওজন ৪ আনা, ০১টি বাটন মোবাইল ফোনসহ সর্বমোট ৩ লক্ষ ৪৫ হাজার ৮’শ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়।
আহতরা গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করেন। এঘটনায় নাচোল থানার নূরপুর গ্রামের মৃত এসরাইল এর ছেলে অটোভ্যান চালক মোঃ রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে গোমস্তাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
এঘনায় পুলিশ মাঠে নামে ডাকাতদের গ্রেফতার ও লুট হওয়া মালামাল উদ্ধারে।