শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন আজ। ১৮৮৬ সালের এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটে শ্রমিকরা কাজের সময়সীমা ৮ ঘণ্টা নির্ধারণ, কাজের উন্নত পরিবেশ, মজুরি বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিতে ধর্মঘট আহ্বান করেন। দাবি আদায়ের জন্য পথে নেমে আসা। শ্রমিকদের অনেককে সেদিন জীবন বিসর্জন দিতে হয়েছিল। সেই আত্মত্যাগের স্মরণ এবং বঞ্চনা থেকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা নিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর এই দিনে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালন করা হয়। দিবসটিকে মে দিবস হিসেবেও অভিহিত করা হয়।
বছর বছর মে দিবস পালন করা হলেও বাস্তবতা হলো, দেশের শ্রমিকদের অধিকার আজও অরক্ষিতই রয়ে গেছে। শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য মজুরির দাবি এখনো উপেক্ষিত, এখনো তাদের বিরাট অংশ মৌলিক মানবাধিকার থেকেও বঞ্চিত। কককককক
এদিকে শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক অসন্তোষে এ বছর কেবল ঈদুল ফিতর ঘিরে নয়। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের সময় থেকে পরবর্তী সময়েও নিয়মিত বিরতিতে দেখা মিলেছে শ্রম অসন্তোষের। বিভিন্ন কারখানার মালিক বিগত সরকার পতনের পর পালিয়েছেন দেশ থেকে। ফলে সেসব কারখানার শ্রমিকদের বেতন বকেয়া রয়ে গেছে। সেই সময়ও বেতন পরিশোধের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে।
বাংলাদেশে মে দিবস পালন তখনই সার্থক হবে, যখন শ্রমিকরা এ ধরনের শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্ত হতে পারবে। মালিকদের মনে রাখতে হবে, শ্রমিকদের ঠকিয়ে শিল্পের বিকাশ বা বাড়তি মুনাফা করা যাবে না। মনে রাখা প্রয়োজন, শ্রমিকের অংশগ্রহণ ছাড়া শিল্প টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।
তাই আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনুধাবন করে শ্রমজীবী মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সরকার ও মালিক শ্রেণীকে অনেক বেশি আন্তরিক হতে হবে। মে দিবস পৃথিবীতে বঞ্চনা ও শোষণ থেকে শ্রমজীবী মানুষের মুক্তির যে বার্তা নিয়ে এসেছে, তা বাস্তবায়ন হোক। শ্রমিক শ্রেণী তাদের মৌলিক অধিকারের সুরক্ষা পাক।