রাজনৈতিক ক্ষমতা যেন আজীবনের পুঁজি না হয় এই অভিন্ন উপলব্ধিকে সামনে রেখে দেশের ৩০টি রাজনৈতিক দল ঐকমত্যে পৌঁছেছে। এক ব্যক্তি জীবনে সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকতে পারবেন। একইসঙ্গে স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের প্রস্তাবেও একমত রাজনৈতিক দলগুলো।
রবিবার (২৭ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১৯তম দিনে এই ঐতিহাসিক মতৈক্যে পৌঁছে দলগুলো।
বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি দল অংশ নেয়।এদিনের বৈঠকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি ঘটে স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের প্রস্তাব নিয়ে। কমিশনের পক্ষ থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ কাঠামো উপস্থাপন করা হয়, যাতে রাজনৈতিক দলগুলো নীতিগতভাবে একমত হয়।
প্রস্তাব অনুযায়ী পুলিশ কমিশনের প্রধান হবেন অবসরপ্রাপ্ত একজন আপিল বিভাগের বিচারপতি (৭২ বছরের নিচে)। সদস্য সচিব হবেন অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত আইজিপি (৬২ বছরের নিচে)।
কমিশনে সরকার ও বিরোধী দল উভয়ের প্রতিনিধি থাকবেন, যার মধ্যে থাকবেন স্পিকার, বিরোধী দলীয় ডেপুটি স্পিকার, মানবাধিকারকর্মী ও সিনিয়র আইনজীবী। অন্তত ২ জন নারী সদস্য বাধ্যতামূলক।
কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য সচিব পূর্ণকালীন দায়িত্ব পালন করবেন। কমিশনের কার্যকারিতা, জবাবদিহিতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া নির্ধারিত হবে একটি স্বতন্ত্র আইনের মাধ্যমে। কমিশনের লক্ষ্য হবে পুলিশ বাহিনীর পেশাদারিত্ব, জবাবদিহিতা এবং জনগণের আস্থা নিশ্চিত করা।
ড. আলী রীয়াজ জানান, সোমবারের মধ্যেই সব দলের কাছে জাতীয় সনদের খসড়া পাঠানো হবে। সেখানে এই দুই প্রস্তাবসহ সংলাপের আলোচ্য বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকবে। আগস্টের মধ্যেই একটি ঐকমত্যভিত্তিক গণতান্ত্রিক রোডম্যাপ প্রকাশের প্রস্তুতি চলছে।
কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেন, আমরা একটি বিষয়ে এক মত হয়েছিলাম, কিন্তু সেটা ঘোষণা করা হয়নি। তা হলো এক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সর্বোচ্চ ১০ বছর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। এখন সেটা লিখিতভাবে জাতীয় সনদে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এ সময় বলেন আমরা আগেই বলেছি—১০ বছরের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকবেন না। এটা আমাদের প্রস্তাব। তবে সংবিধান সংশোধনের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন নিয়োগ নিয়ে যুক্তিসঙ্গত কাঠামো না হলে আগের শর্ত আমরা পুনর্বিবেচনা করব।