শরীয়তপুর সদর উপজেলার প্রেমতলা মোড় থেকে বিপুল পরিমান নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকাল ৭টয় শরীয়তপুর সদর উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহীনি ও পরিবেশ অধিদপ্তর যৌথ অভিযান পরিচালনা করে পলিথিন বহনকারী ট্রাক, ট্রাক চালক ও হেল্পারকে আটক করে।
পরবর্তীতে ট্রাক মালিককে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন শরীয়তপুর সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইলোরা ইয়াসমিন।
জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গোয়েন্দা সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে আনুমানিক ৪ হাজার কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করা হয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৮ লাখ টাকা। জব্দকৃত পলিথিন জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের হেফাজতে রয়েছে। ট্রাক মালিক শফিক বেপারীকে নিষিদ্ধ পলিথিন পরিবহনের দায়ে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
এনএসআই, ডিজিএফআইসহ সকল গোয়েন্দা সংস্থা নিষিদ্ধ পলিথিন সরবরাহকারী জাহাঙ্গীর সম্পর্কে অবগত রয়েছে। পালং বাজারের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীরকে নিষিদ্ধ পলিথিন সরবরাহের দায়ে ইতোমধ্যে জরিমানা করা হয়েছে। বর্তমানে তিনিই ধরাছোয়ার বাইরে থেকে এই নিষিদ্ধ ব্যবসা পরিচালা করছেন।
নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে কাজির হাটে জুতার ব্যবসায় করছেন কালু শেখ। তিনি জানায়, শুকুর তাকে মোবাইল ফোনে জানায় শুকুরের পলিথিন চালান ধরা পড়েছে। তার খোঁজ নিতে এসেছেন কালু শেখ। তিনি আরো জানায়, নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবসা করে পালং বাজার বনিক সমিতির সাবেক সদস্য জাহাঙ্গীর।
তিনি বর্তমানে এক বিএনপি নেতার ছত্রছায়ায় রয়েছেন। প্রতি সপ্তাহে ২-৩ বার জাহাঙ্গীরের পলিথিনের চালান আসে। করিডোর হিসেবে এই রুট ব্যবহার নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবসায়ীরা। জাহাঙ্গীর ছাড়া অন্য কেউ শরীয়তপুর ও আশপাশের জেলায় পলিথিন, বেকারীতে ব্যবহার করা কমিক্যাল ও ভেজার মসলা আনতে পারে না।
ঢাকায় যত নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপানকারী কারখানা রয়েছে তার বেশীর ভাগ মালিকদের বাড়ি শরীয়তপুরের গঙ্গানগর, গাজীপুর ও চন্দ্রপুর এলাকায়। তাদের সাথেও জাহাঙ্গীরের ব্যবসায়ীক সম্পর্ক। তাদের উৎপাদিত পলিথিনের ব্যবসা করে জাহাঙ্গীর। জাহাঙ্গীরের সেই নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবসা শুকুর পরিচালনা করে আর শফিক বেপারী পরিবহন করে।
জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রাসেল নোমান জানায়, শরীয়তপুরের একটি চক্র শরীয়তপুর ও পাশ^বর্তী জেলায় দীর্ঘদিন ধরে নিষিদ্ধ পলিথিন সরবরাহ ও ব্যবসা করে আসছে। আজ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যৌথ অভিযান চালিয়ে পলিথিন বহনকারী একটি ট্রাক আটক করা হয়। ট্রাকটির অর্ধেক খালি ছিল।
আটক হওয়ার পূর্বে বিভিন্ন পয়েন্টে পলিথিন নামিয়ে রেখেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পলিথিন জব্দসহ ট্রাক মালিককে বাংলাদেশ পরিবেশ আইন ১৯৯৫ এর ৬ক ধারায় জরিমানা করা হয়ছে। আমরা তৎপর রয়েছি। এই নিষিদ্ধ পলিথিন সরবরাহ ও বাজারজাত করণ বন্ধ করা হবে।