সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:০২ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি :
বাংলাটপনিউজ২৪.কম-এ দেশব্যাপী জেলা-উপজেলা পর্যায়ে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে। সরাসরি যোগাযোগ করুন -banglatopnews24@gmail.com. মোবাইল-০১৭৪৩৯৯৮৭৪১.

বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর সরকারি কলেজে কমার্স বিভাগের ফলাফলে ভরাডুবি

Reporter Name
  • আপডেটের সময়: সোমবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৫
  • ১০০ সময় দেখুন

৫ আগষ্ট স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর নিজেকে বাঁচাতে আত্মগোপনে চলে যান বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ (আওয়ামীলীগ নেতা) এজাবুল হক বুলি।

আর এসুযোগ কাজে লাগিয়ে ক্লাস গাফলতিসহ কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রতি কোন প্রকার তদারকি বা জবাবদিহিতায় ছিলেন না বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর সরকারি কলেজের কমার্স বিভাগের শিক্ষকগণ।

ফলে এবছর বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সরকারি কলেজে কমার্স বিভাগের ফল বিপর্যয় ঘটে। এই বিভাগ থেকে ১১ জনে মধ্যে কেউ পাশ করেনি। বিজ্ঞান বিভাগে ১৬ জনের মধ্যে পাশ করেছে মোট ৭ জন। এছাড়াও কলেজের এইচ.এস.সি পরীক্ষার্থীদের মোট পাশের হার ৪৩%।

জানা গেছে, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সরকারি কলেজে এবারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নেয় কমার্স শাখার ১১জন। এর মধ্যে একজন শিক্ষার্থীও পাশ করেনি। এনিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এই কলেজের বিজ্ঞান শাখা থেকে ১৬ জন পরীক্ষা দিলেও পাশ করেছে মোট ৭ জন।

আর মানবিক শাখা থেকে ২১৩ জনের মধ্যে পাস করেছে ৯৫ জন। কলেজের পাশের হার ৪৩ ভাগ। বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর সরকারি কলেজের কমার্স বিভাগে শিক্ষক রয়েছেন ৩ জন। কমার্স বিভাগের শিক্ষকগণ হচ্ছেন-শামীম আহমেদ, মজিবুর রহমান ও মাজকুরা খাতুন।

এবিষয়ে কলেজের কয়েকজন শিক্ষক ক্ষুদ্ধস্বরে বলেন, আমাদেরকলেজের অধ্যক্ষ স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর আওয়ামীলীগ নেতা হওয়ায় দীর্ঘ ১১ মাস আত্মগোপনে ছিলেন। আর এই সুযোগে অধ্যক্ষের আস্থাভাজন কমার্স বিভাগের এই ৩জন শিক্ষক ক্লাস তো ঠিকমত করেই নি, কলেজের আসতেন মন মতো।

কিন্তু, অধ্যক্ষ সাহেব তো নিজেই আত্মগোপনে ছিলেন এবং আস্থাভাজন ওই শিক্ষকদের কোন গাফলতি বা অনিয়মিত কলেজে আসা, এসব অধ্যক্ষের চোখেই পড়তো না। জবাবদীহিতার তো প্রশ্নই উঠে না। এতে ওই শিক্ষকগন ইচ্ছেমত চলেছেন। শিক্ষার্থীদের বিষয়ে তাদের কোন গুরুত্বই ছিলো না।

ফলে কলেজের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার চরম ক্ষতি হয়েছে। এর ফলশ্রুতিতেই কমার্স বিভাগের ফলাফলে এমন বিপর্যয়। শিক্ষকগণ অভিযোগ করে আরও বলেন, কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ফলাফলও সন্তোষজনক নয়।

এছাড়া, এখনো কলেজের অধ্যক্ষ সাহেব ঠিকমতো কলেজে আসেন না। মাঝে মধ্যে আসলেও, সেটা ক্ষনিকের জন্য। তাই কলেজের প্রশাসনিক কার্যক্রম ওভাবেই চলছে। সব মিলিয়ে এবছর কলেজের কমার্স ও বিজ্ঞান বিভাগের ফলাফল বিপর্যয়ের কারন অধ্যক্ষ এবং অধ্যক্ষের আস্থাভাজন শিক্ষকগন।

ব্যবসায় শিক্ষা শাখার ফল বিপর্যয়ের কারণ (কেউ পাস না করা) হিসেবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানা গেছে, এ বিভাগের শিক্ষকরা ঠিকমত যেমন ক্লাস নেননা, তেমনি ক্লাস করার যোগ্যতাও রাখেন না। অন্যদিকে, বিজ্ঞান বিভাগের রসায়নের প্রভাষক ২০২৩ সালে অবসরে গেলেও শিক্ষক পদ শূন্য জানিয়ে চাহিদা না দেয়ায় এ কলেজে রসায়নের প্রভাষক এখন পর্যন্ত পদায়ন করা হয়নি।

এ বিষয়ে কয়েকজন শিক্ষক জানান, চাহিদা দিলেই ক্যাডার পদের শিক্ষক এসে যদি নন ক্যাডার অধ্যক্ষের চেয়ার দখল করে বসেন, সেই আতঙ্কে অধ্যক্ষ রসায়ন শিক্ষকের চাহিদা পর্যন্ত দেননি।

আর গণিতের শিক্ষক অধ্যক্ষ মোঃ এজাবুল হক নিজেই হওয়ায় এবং তিনি চাকরী জীবনে কখনো-ই একটি ক্লাস না নেয়ায় এ কলেজে কমার্স ছাড়াও বিজ্ঞান বিভাগের ফলাফলও প্রতিবারই খারাপ হয়।

এছাড়া, পদার্থ বিদ্যার প্রভাষক ক্লাসের ক্ষেত্রে অমনোযোগী এবং ক্লাসে কিছু বোঝাতে পারেননা বলে বিজ্ঞান বিভাগে ফেল করা কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন।

সব মিলিয়ে কলেজে সার্বিক ফলাফল খারাপের পিছনে অধ্যক্ষ মোঃ এজাবুল হকের অযোগ্যতা, কলেজে তার নিয়মিত অনুপস্থিতি, শিক্ষার্থীদের নিজ ও রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার, বিশেষ করে ফেল করা অধিকাংশ শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার কয়েক মাস আগে থেকে তাকে বাঁচানোর জন্য ডিসি অফিস ও বিভিন্ন তদ্বির কাজে ব্যবহার করা অন্যতম কারণ বলে জানা গেছে।

কারণ তিনি গত জুলাই আন্দোলন থেকে বছরাধিক ধরে কলেজে অনুপস্থিত থেকে কলেজকে অস্থিরতার মধ্যে রেখেছেন।

এদিকে, একটি বিশেষ সূত্র জানিয়েছে, কমার্স এবং বিজ্ঞান শাখার এ ক’জন শিক্ষক অধ্যক্ষ এজাবুল হক বুলির সমর্থক হওয়ায় তারা পলাতক বুলিকে বাঁচানোর চেষ্টায় সব সময় ব্যস্ত থাকেন। ফলে কলেজে শিক্ষার মান খারাপের দিকে চলে গেলেও কোন গুরুত্ব, মাথাব্যাথা বা অনুশোচনা, কোনটায় নেই ওই শিক্ষকদের।

এ কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের দাবি, অধ্যক্ষ এজাবুল হক বুলি’কে বরখাস্ত করে নতুন অধ্যক্ষ পদায়ন না হলে কলেজটির মান ধ্বংসের দিকেই যেতে থাকবে।

উল্লেখ্য, কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ এজাবুল হক কয়েকটি ফৌজদারী মামলার আসামী এবং তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে ইতোমধ্যে কয়েকটি তদন্ত হয়েছে, যেখানে তার বহু প্রকার অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশিতে ব্যবস্থা গ্রহণের অপেক্ষায় আছে।

শিক্ষানুরাগীদের দাবী, দেশের একজন অতি সম্মানিত ব্যক্তি, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর এর নামে হওয়া কলেজে-স্বৈরাচারের দোষর এবং এমন বিতর্কিত ও নানা অনিয়মের সাথে জড়িত অধ্যক্ষ এজাবুল হক বুলিকে কলেজ থেকে অপসারন করে একজন যোগ্যতা সম্পন্ন অধ্যক্ষ পদায়নের। উল্লেখ্য, গত ১৬ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) এইচ.এস.সি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়।

অনুগ্রহ করে এই পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

এই বিভাগের আরও খবর...
© All rights reserved © ২০২৫ বাংলা টপ নিউজ ২৪
ESAITBD Sof-Lab UAE/BD

Warning: PHP Startup: Unable to load dynamic library 'mysqli.so' (tried: /opt/alt/php82/usr/lib64/php/modules/mysqli.so (/opt/alt/php82/usr/lib64/php/modules/mysqli.so: undefined symbol: mysqlnd_global_stats), /opt/alt/php82/usr/lib64/php/modules/mysqli.so.so (/opt/alt/php82/usr/lib64/php/modules/mysqli.so.so: cannot open shared object file: No such file or directory)) in Unknown on line 0