চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ সব দলই পুলিশকে ব্যবহার করতে চাই। পুলিশকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়া হয় না। ৫ আগষ্ট ছাত্র- গণ-অভ্যুত্থানের পরও ফ্যাসিসটদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে বিভিন্ন দল।
পুলিশকে সাভাবিক করতে সময় লাগবে, মব জাস্টিস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, আমাদের নিয়মের মধ্যে থেকে কাজ করতে হচ্ছে। পুলিশ কে একটি সাধিন সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কোন উদ্যোগ নেয়া
হয়নি কখনো।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে শহীদ সাটু হল মিলনায়তনে চাঁপাইনবাব গঞ্জ জেলা পুলিশের আয়োজনে আইন শৃঙ্খলা সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন মতবিনিময় সভার প্রধান অতিথি রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান পিপিএম বার পিএইচডি। সভায় সভাপতিত্ব করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ সুপার মোঃ রেজাউল করিম বিপিএম সেবা।
রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান আরও বলেন, পুলিশ সন্ত্রাসী বা অপরাধীদের জম। ভুক্তভোগীদের সহায়ক। কিন্তু আমরা আইন মানতে চায় না, আমরা পেশাদার পুলিশ গড়ে তুলতে চায়।
শিক্ষার্থীদের মোবাইল আশক্তি থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে। আগামী নির্বাচন গ্রহণ এর পরিবেশ তৈরির জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। মাদক নিয়ন্ত্রণ করা হবে। তবে এক্ষেত্রে সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
চাঁপাই নবাবগঞ্জ শহীদ সাটু হল মিলনায়তনে সুধীজনদের নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সুধীজনরা পুলিশের রাজশাহী বিভাগীয় ডিআইজির কাছে কিশোর গ্যাং, ককটেলবাজি, মাদকসহ প্রায় ২৮টি বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন। সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের আমির আবুজার গিফারী, নায়েবে আমীর ও সাবেক সাংসদ অধ্যাপক লতিফুর রহমান, জামায়াত নেতা মোখলেশুর রহমান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও কৃষকদলের আহবায়ক মোঃ তসিকুল ইসলাম তোসি, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ নজরুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল, চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ খাইরুল ইসলাম, বিএনপি নেতা ও চরবাগডাঙ্গা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ রফিকুল ইসলাম বুলবুল, চ্যানেল আই এর জেলা প্রতিনিধি ও দৈনিক চাঁপাই দর্পণ এর প্রকাশক ও সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু, সুজন এর জেলা সাধারন সম্পাদক সাংবাদিক মনোয়ার হোসেন জুয়েল, বৈষম বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক আব্দুর রাহিম, সদস্য সচিব সাব্বির আহম্মেদসহ শিক্ষার্থীরা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
এসময় বক্তারা চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সন্ত্রাস, মাদক, কিশোরগ্যাং নিয়ন্ত্রণ, দালাল মুক্ত থানা, ফ্যাসিস্টদের দোষর পুলিশের কর্মকর্তাদের জেলা থেকে অপসারণসহ বিভিন্ন সমস্যাগুলো তুলে ধরেন।
শেষের প্রধান অতিথি সুধিজনদের সমস্যগুলো নিয়ে অভিযোগের সুরে বলেন, পুলিশকে স্বাধীন বাহিনী হিসেবে কাজ করতে দেয় না কোন দল। সবাই পুলিশকে পেটুয়া বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করতে চাই।
আমরাও চাই, পাঁচ আগস্টের পর থেকে পুলিশ একটি স্বাধীন ও স্বতন্ত্র বাহিনী হোক। সরকার বিভিন্ন সংস্থা সংস্কার চাইছে, কিন্তু পুলিশের সংস্কার কেউ চাইছে না। পুলিশ কে সংষ্কার নিয়ে কোন আলোচনাই নাই। তবে আইনের সংশোধন করে পুলিশকে একটি আধুনিক বাহিনী গড়ে তোলা সম্ভব, যা কোন দলই চাচ্ছে না বা এর আগেও চাইনি।
তিনি বলেন, বর্তমানে ফ্যাসিসটদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে বিভিন্ন দল। তাই আমরা কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছি। আমাদের লোকবল সীমিত। তিনি আরও বলেন, আমাদের অনেক সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। তাই সব মিলিয়ে মনোবল পুনরুদ্ধার করতে আরও একটু সময় লাগবে।
সুধিজনদের উদ্দেশ্য করে প্রধান অতিথি বলেন, সাধারণ মানুষ আইন মানতে চায় না বরং আইন ভেঙে পুলিশকে ঘুষ দিয়ে নিজেদের পক্ষে কাজ করাতে চাই, এই অবস্থা থেকে আমাদের বের হতে হবে। প্রত্যেকটি দল যদি আমাদের কাজে সহায়তার জন্য ২০ জন করে প্রতিনিধি দেন, তাহলে সব অন্যায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে নিয়ন্ত্রন করতে পারবো।
জেলার সকল সমস্যা দূর করতে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। অনুষ্ঠানের সভাপতি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ সুপার মোঃ রেজাউল করিম বিপিএম সেবা বলেন, আমার দরজা আপনাদের জন্য সব সময় খোলা।
জেলার সমস্যা নিয়ে আপনারা আমাকে পরামর্শ দেবেন। জেলা থেকে সন্ত্রাস, মাদকসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করতে হলে আপনাদের এগিয়ে আসতে হবে। জেলার সুধিসমাজের ব্যক্তিদের সাথে নিয়ে জেলার সমস্যাগুলো দূর করতে জেলা পুলিশ সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে।