বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ০৪:০৩ পূর্বাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি :
বাংলাটপনিউজ২৪.কম-এ দেশব্যাপী জেলা-উপজেলা পর্যায়ে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে। সরাসরি যোগাযোগ করুন -banglatopnews24@gmail.com. মোবাইল-০১৭৪৩৯৯৮৭৪১.

ককটেল বিষ্ফোরণ-সংঘর্ষ-মামলা পাল্টা মামলায় উত্তপ্ত ইসলামপুর

Reporter Name
  • আপডেটের সময়: মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫
  • ৯১ সময় দেখুন

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ দীর্ঘদিন পর আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সন্ত্রাসের জনপদ চরাঞ্চলের ইসলামপুর। তবে, পূর্বের গ্রাম্য রাজনীতির নেতাদের বদলে উদয় হয়েছে নতুন নেতৃত্বের। শুরু হয়েছে তান্ডবের। চলছে একে অপরের উপর দোষ চাপিয়ে ফায়দা লুটে নেয়ার চেষ্টা।

রাজনৈতিক ক্ষমতার বিষয় না হলেও কেউ সাংবাদিকতার দাম্ভিকতায় ক্ষমতাবান, কেউ স্থানীয়ভাবে। কিন্তু আবারও পূর্বের সেই সন্ত্রাসের জনপদের মতই আতংকগ্রস্থ ও নিষ্পেষিত এলাকার সাধারণ মানুষ। ভয়ে ভীত, কখন যানি কার উপর দায় চেপে যায়। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে অনেক সাধারণ পরিবার।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের তেররশিয়া পোড়াগ্রাম ও লক্ষীনারায়ণপুর এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ককটেল বিস্ফোরণ, রক্তাক্ত সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি মামলা আর উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পুরো অঞ্চল। সাংবাদিক ফারুক আহমেদ বনাম ইউপি মেম্বার জিয়া-এই দুই পক্ষের দ্বন্দ্বে জনজীবন এখন অতিষ্ঠি এবং আতঙ্কিত।

এই আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার এবং পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে রাজনৈতিক গোজামিল সৃষ্টির মাধ্যমে ফায়দা হাসিলের চেষ্টার বিষয়ে সোমবার (১৪ জুলাই) বেলা সাড়ে এগারোটায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন পুলিশ সুপার মোঃ রেজাউল করিম বিপিএম সেবা।

পুলিশ সুপার কার্যালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, প্রায় ছয় থেকে নয় মাস আগে মহানন্দা ও পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি ও বালি উত্তোলনকে কেন্দ্র করে সাংবাদিক ফারুক ও জিয়া মেম্বারের মধ্যে প্রথম বিরোধ শুরু হয়। পরে উপজেলা প্রশাসনের অভিযানে এসব অবৈধ বালু ও মাটি উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ হলে উভয় পক্ষ নতুন করে সংঘাতে জড়ায়।

সংঘর্ষের একপর্যায়ে আহত হয় সাংবাদিক ফারুকপন্থী শিমুল, অপরদিকে হামলার শিকার হন জিয়া মেম্বারের ভাই কোরবান ও সমর্থক শহিদুল ইসলাম। ঘটনার পর থেকে একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ, হামলা ও মামলা-পাল্টা মামলার ঘটনায় পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সদর মডেল থানার পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা তৎপর হয়।

পুলিশ জানায়, গত ১০ জুলাই ও ১১জুলাই দুই পক্ষ ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় চরম আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি মামলায় শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। সাংবাদিক ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৫টি মামলা বিচারাধীন/তদন্তাধীন রয়েছে।

পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে আরো বলা হয়, ফারুক আহমেদ চৌধুরী তার জামিনে থাকা অবস্থায় পুলিশের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে সংবাদ মাধ্যমে মিথ্যা ও অতিরঞ্জিত তথ্য প্রকাশ করে প্রশাসনকে চাপে ফেলার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তার গ্রুপে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের সম্পৃক্ততা থাকলেও এই ঘটনা পুরোপুরি স্থানীয় আধিপত্যকে কেন্দ্র করে সংঘটিত, এটি কোনো রাজনৈতিক সংঘাত নয়।

পুলিশ সুপার দৃঢ়কন্ঠে বলেন, অপরাধী যে পক্ষেরই হোক না কেন, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। চাঁপাইনবাবগঞ্জে ককটেল রাজনীতি নয়, আধিপত্যের দৌড় প্রতিহত করবে প্রশাসন! “এটি কোনো রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নয়।

ফারুক ও জিয়া, উভয় পক্ষেই বিভিন্ন দলের অনুসারী রয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরপেক্ষভাবে সব মামলার তদন্ত করছে,” বলেন পুলিশ সুপার। সচেতন মহলের দাবী, দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা প্রদান এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বন্ধের। এসময় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, এসব অস্বীকার করে সাংবাদিক ফারুক গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছেন, এসপি মহাদয়ের পুরো বক্তব্যে আমাকে ভিকটিম বানানো হয়েছে। ঘটনাস্থল আমার দাদার বাড়ি এলাকা। যেখান থেকে আমরা ৩০ বছর আগেই চলে এসেছি। আমি শহরে বসবাস করি প্রায় ১৫ বছর ধরে। ইসলাম-পুরের কোন বিষয়ে আমি সুবিধাভোগী বা গ্রাম্য রাজনীতিতে আমার কোন সম্পৃক্তা নেই।

তিনি গণমাধ্যমের সামনে আমাকে ভিলেজ পলিটিক্সের একটি পক্ষের নেতা বানিয়ে দিয়েছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা আমার চাচা-চাচাতো ভাই। আমি তাদের নেতা নই। সাংবাদিক ফারুক আরও বলেন, এঘটনায় এলাকার পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে। এর দায় কে নিবে?।

পুলিশের দেয়া তথ্য মোতাবেক এই আধিপত্যের বিষয়-প্রায় ৬-৯মাস পূর্বে সাংবাদিক ফারুক আহমেদ ও নাসির মেম্বার মহানন্দা নদী থেকে, আর ৬-৭ মাস আগে জিয়া মেম্বার পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু-মাটি উত্তোলন শুরু করেন। প্রশাসনের নজরে এলে সদর ইউএনও ঊীপধাধঃড়ৎ জব্দ করে স্থানীয় ইউপি সদস্য নাজিমের জিম্মায় রাখেন।

কিন্তু ১৫-২০ দিন পর ফারুকের লোকজন গোপনে পুনরায় উত্তোলন শুরু করে। পুলিশ আসার খবরে পালানোর সময় ট্রাক্টরের নিচে পড়ে ফারুক গ্রুপের শিমুল (৩৬) গুরুতর আহত হন।

প্রথম মামলা নং: ৫৮, তারিখ: ২৫-০৩-২০২৫, ধারা: ৩২৩/৩২৫/৩০৭/৫০৬(২)/১১৪ পেনাল কোড, বাদী: শিমুল (ফারুক গ্রুপ) অভিযুক্তঃ জিয়া মেম্বারসহ ১১ জন এজাহার-নামীয় ও ১৫-২০ জন অজ্ঞাত। ২য় ঘটনা ও কোর্ট মামলাঃ কিছুদিন পর কোরবান নামের এক যুবককে চায়ের দোকানে একা পেয়ে লোহার রড দিয়ে মারধর ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ফারুক গ্রুপ।

বাদী: কোরবান, আসামি: সাংবাদিক ফারুক আহমেদ ও তার সহযোগীরা (মামলা কোর্টে চলমান)। ৩য় মামলাঃ- তারিখ: ১৫-০৬-২০২৫ ঘটনা: রাত ১০টায় তেররশিয়া জুম্মা মসজিদের সামনে শহিদুল ইসলামকে ধারালো অস্ত্রে কুপিয়ে জখম করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ফারুকের লোকজন।

বাদী: কামরুল ইসলাম (ভাই), মামলা নং: ২৭, তারিখ: ২০-০৬- ২০২৫। ধারাঃ ১৪৩/ ৩৪১/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/১১৪ পেনাল কোড ও বিস্ফোরক আইন ৩/৪/৬ অভিযুক্তঃ ফারুক আহমেদসহ ১১ জন।বর্তমান অবস্থা: ৫ জন আদালত থেকে জামিনে মুক্ত।

৪র্থ মামলা (পাল্টা): বাদী: মো. অসিম আলী (ফারুক গ্রুপ), মামলা নং: ৩৯, তারিখ: ২৩-০৬-২০২৫, ধারাঃ ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩০৭/৩৭৯/১১৪ পেনাল কোড ও বিস্ফোরক আইন ৩/৪/৬, অভিযুক্ত: জিয়া মেম্বার ও তার অনুসারীরা, অবস্থা: জিয়া মেম্বারের ছেলে নিশানসহ ৩ জন জামিনে।

৫ম মামলা:-তারিখঃ১০-০৭-২০২৫, ঘটনাঃ শহিদুল ও কামরুলকে মামলা তুলে নিতে চাপ, না মানায় হুমকি, ৫টি ককটেল বিস্ফোরণ। পরদিন ১১ জুলাই সকাল ৬:৩০ টায়: ৩৫-৪০ জন ফারুক গ্রুপের লোক ৬-৭টি বাড়িতে হামলা, পাল্টা ককটেল বিস্ফোরণ জিয়া গ্রুপের।

বাদী: সামিরুল ইসলাম (জিয়া গ্রুপ), মামলা নং: ১৭, তারিখ: ১১-০৭-২০২৫, ধারা: ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩২৬/৩০৭/৪২৭/৫০৬(২)/১১৪ ও বিস্ফোরক আইন ৩/৪/৬, অভিযুক্ত: ফারুক আহমেদসহ ২২ জন এজাহারনামীয় ও ২০-২৫ জন অজ্ঞাত। ৬ষ্ঠ মামলা (পাল্টা):-বাদী: মো. অসিম আলী (ফারুক গ্রুপ) মামলা নং:২০, তারিখ: ১২-০৭ -২০২৫, ধারা: ১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৪২৭/৩৭৯/৫০৬(২)/১১৪ ও বিস্ফোরক আইন ৩/৪/৬, অভিযুক্ত: জিয়া মেম্বারসহ ২৭ জন।

অনুগ্রহ করে এই পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

এই বিভাগের আরও খবর...
© All rights reserved © ২০২৫ বাংলা টপ নিউজ ২৪
ESAITBD Sof-Lab UAE/BD

Warning: PHP Startup: Unable to load dynamic library 'mysqli.so' (tried: /opt/alt/php82/usr/lib64/php/modules/mysqli.so (/opt/alt/php82/usr/lib64/php/modules/mysqli.so: undefined symbol: mysqlnd_global_stats), /opt/alt/php82/usr/lib64/php/modules/mysqli.so.so (/opt/alt/php82/usr/lib64/php/modules/mysqli.so.so: cannot open shared object file: No such file or directory)) in Unknown on line 0