সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১১:০২ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি :
বাংলাটপনিউজ২৪.কম-এ দেশব্যাপী জেলা-উপজেলা পর্যায়ে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে। সরাসরি যোগাযোগ করুন -banglatopnews24@gmail.com. মোবাইল-০১৭৪৩৯৯৮৭৪১.
শিরোনাম :
নির্বাচনী জোট নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি: সারজিস সিটি ইউনিভার্সিটি বন্ধ ঘোষণা, শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ আশুলিয়ায় থুতু ফেলাকে কেন্দ্র করে সিটি ও ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ ! মানিকগঞ্জে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে ভুয়া আইনজীবী আটক ঝিনাইদহে দীর্ঘ ২৩ বছর পর পৈত্রিক জমি ফিরে পেলেন সাবেক প্রকৌশলী সবাই সংঘাতের জন্য মুখিয়ে আছে: তথ্য উপদেষ্টা মানিকগঞ্জে সাবেক  ছাত্র শিবির নেতাকর্মী  প্রীতি সন্মেলন অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিশেষ সম্মাননা পেলেন শহিদুল ইসলাম আমি এনসিপির সঙ্গে আছি, ভবিষ্যতেও থাকবো-নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে পুলিশ কনস্টেবল, অতঃপর বিয়ে

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে ‘গণভোট’ কমিশন ও সরকারের হাতে

Reporter Name
  • আপডেটের সময়: বুধবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৭১ সময় দেখুন

দেশের রাজনৈতিক সংস্কারে নতুন দিগন্ত উন্মোচনকারী ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ বাস্তবায়ন নিয়ে উত্তাপ ছড়াচ্ছে দেশের রাজনীতিতে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জানিয়েছে, তারা গণভোটের সময় নির্ধারণ নিয়ে নিজেরা কোনো নির্দিষ্ট সুপারিশ দেবে না। বরং, এ সিদ্ধান্ত নির্বাচনকালীন সরকার ও নির্বাচন কমিশনের হাতে ছেড়ে দেওয়াই যুক্তিযুক্ত হবে বলে তারা মনে করে।

রাজনৈতিক আলোচনার প্রেক্ষাপট ও কমিশনের অবস্থান গত ৮ অক্টোবর রাতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা শেষে এই বিষয়ে কমিশনের অভিমত পরিষ্কার হয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে আলোচনা শেষে একটি ফটোসেশনে অংশ নেন কমিশন ও রাজনৈতিক দলের নেতারা।

আলোচনায় অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও মতবিরোধ ছিল স্পষ্ট। কেউ চাইছে সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট অনুষ্ঠিত হোক, আবার কেউ বলছে এর আগেই গণভোট আয়োজন করতে হবে।

ফলে, ঐকমত্য কমিশন গণভোটের নির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করে কোনো সুপারিশ দিতে আগ্রহী নয়। কমিশন সূত্র জানায়, যদি তারা নির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করে, তাহলে তা সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ওপর এক ধরনের চাপ হয়ে দাঁড়াতে পারে। সেজন্যই তারা চাইছেন সময় নির্ধারণের বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করুক।

সনদ স্বাক্ষরের সময় নির্ধারণ এবং পরবর্তী পরিকল্পনা কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ১৭ অক্টোবর ‘জুলাই সনদ’ স্বাক্ষরিত হবে। একই সুপারিশ পাঠানো হবে রাজনৈতিক দলগুলোকেও।

বিশেষজ্ঞ মতামত ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা এ প্রসঙ্গে জানা গেছে, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, অধ্যাপক এবং অভিজ্ঞ আইনজীবীদের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষজ্ঞ প্যানেল এই বিষয়ে একটি মতামত দিয়েছেন। তারা বলেছেন, গণভোট আয়োজনে যদি নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে নির্বাচন কমিশনের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হতে পারে।

একসঙ্গে দুটি ভোট আয়োজন মানে একাধিক ব্যালট, অতিরিক্ত সময়, নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার জটিলতা—যা সবকিছুই নির্বাচন কমিশনের দক্ষতা ও প্রস্তুতির ওপর নির্ভর করবে।

ঐকমত্য কমিশন মনে করে, এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের যৌথ সিদ্ধান্ত নেওয়াই হবে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ। দলগুলোর মতানৈক্য ও সন্দেহ

গণভোট ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে বড় রাজনৈতিক দলগুলো একমত নয়। যেমন: বিএনপি চায়, ‘জুলাই সনদ’ নিয়ে কোনো সংবিধান আদেশ (Constitutional Order) না হোক। তারা বলছে, একটি প্রজ্ঞাপন দিয়ে গণভোটের জন্য নতুন অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা হোক।

অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মনে করে, একটি ‘জুলাই বাস্তবায়ন আদেশ’ জারি করে তবেই গণভোট আয়োজন করা উচিত।

এই ভিন্নমতগুলো শুধু সময় বা পদ্ধতি নিয়ে নয় বরং সনদের সাংবিধানিক অবস্থান, আইনগত ভিত্তি ও ভবিষ্যৎ রূপান্তরের ধরন নিয়েও বিস্তৃত।

এ বিষয়ে বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “নির্বাচন ও গণভোট একদিনে হলে ফলাফলে তফাৎ হবে না, বরং ব্যয় কমবে।”

এ বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, “নভেম্বর মাসে গণভোট অনুষ্ঠিত হলে তাতে জাতীয় নির্বাচনের পূর্বপ্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হলে তার ভিত্তিতেই জাতীয় নির্বাচন হবে।”

এনসিপির আখতার হোসেন বলেন, “সিদ্ধান্ত কমিশনের ওপর নির্ভর করছে।”ইসলামী আন্দোলনের গাজী আতাউর রহমান বলেন, “জুলাই সনদের আইনি স্বীকৃতি দিতে জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোট দরকার। তবে একই দিনে দুটি ভোট সমস্যার হতে পারে।”

 

প্রযুক্তিগত ও সাংগঠনিক চ্যালেঞ্জ একসঙ্গে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট হলে ভোট গ্রহণের সময় বাড়বে। একাধিক ব্যালট, জটিল গণনা, বিভ্রান্তি, ভুল গণনার ঝুঁকি ও ফলাফল ঘোষণায় বিলম্ব সবকিছুই একসঙ্গে সংঘটিত হতে পারে।

তবে, আলাদা দিনে ভোট আয়োজন করলে নির্বাচনী ব্যয় বৃদ্ধি পাবে, প্রশাসনিক ঝামেলা বাড়বে এবং রাজনৈতিক উত্তাপ দীর্ঘায়িত হবে। ফলে, বিষয়টি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের পাশাপাশি কারিগরি সক্ষমতা ও আর্থিক বাস্তবতা বিবেচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।

কমিশন সুপারিশ দেবে, চাপ নয় এই প্রসঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “কমিশনের দায়িত্ব হলো প্রক্রিয়াগত সহায়তা ও বাস্তবায়নযোগ্য রূপরেখা তৈরি। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে সরকার ও নির্বাচন কমিশন।”

সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ও ঢাকা-৭ আসনের ভোটার সানাউল হক বলেন, “জুলাই সনদ নিয়ে গণভোট আয়োজন দেশের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় উন্মোচন করতে পারে।

তবে, সে পথে রয়েছে জটিলতা, মতানৈক্য, রাজনৈতিক কৌশল ও বাস্তবায়নের প্রশ্ন। এখন পর্যন্ত কমিশনের অবস্থান বিবেচনায় ধরে নেওয়া যায়, তারা সংবিধান ও বাস্তবতার মধ্যে একটি ভারসাম্য খুঁজছে। তারা চায় তাদের সুপারিশ রাজনৈতিক চাপ বা সংকট বাড়াক।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কার ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ অনেকটাই নির্ভর করছে এই গণভোট বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ও গ্রহণযোগ্যতার ওপর।”

 

অনুগ্রহ করে এই পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

এই বিভাগের আরও খবর...
© All rights reserved © ২০২৫ বাংলা টপ নিউজ ২৪
ESAITBD Sof-Lab UAE/BD