সাটুরিয়া উপজেলার চাচিতারা গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল (২৮ জানু-১লা ফেব্রুয়ারি) তিনদিন ব্যাপী আশুরুদ্দিন পাগলা ওরফে বইড়া পাগলার বার্ষিক মেলা। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও পাগলার মেলায় বিপুল সংখ্যক-ভক্তবৃন্দ ও দর্শনার্থীদের আগমন ঘটে। ঐতিহ্যবাহী এই মেলার প্রথম দিনে পাগলার মাজারে মাল্যদান-সহ তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মিলাদ মাহফিল ও তবারক বিতরন অনুষ্ঠিত হয়।
মেলার দ্বিতীয় দিনে আয়োজন করা হয় সামাজিক যাত্রাপালা ‘সূর্য্য-স্বাক্ষী। চাচিতারাসহ আশে-পাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষ মেলায় সমাবেত হন সামাজিক যাত্রাপালা ‘সূর্য্য-স্বাক্ষী দেখার জন্য। অভিনেতাদের অভিনয় শৈলীতে চারদিকে মুহুমুহু করতালি ভেজে উঠে। মানুষ অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে এই যাত্রাপালা উপভোগ করে।
মেলার উদ্ভোধক জনাব মশিউর রহমান হেলালী তার এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, সামাজিক যাত্রাপালা হচ্ছে গ্রামবাংলার মানুষের প্রাণ। দীর্ঘ দুঃশাসনের পর আজ মানুষ অনেকটাই স্বাধীন। ফলে দলমত নির্বিশেষে সকলে আজকের যাত্রাপালা দেখার জন্য একত্রিত হয়েছে। যা কিছু দিন আগেও ছিল অসাধ্য।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী দুঃশাসনে মানুষ স্বাধীনভাবে কথাবলার অধিকার হারিয়ে ফেলে ছিল। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের তারা আবার সেই অধিকার ফিরে পেয়েছে। এ কথা সকলের মনে রাখা দরকার যে, অন্যায়কারী ও অপরাধীরা কোন দিনই সফল হয় না। মানুষ আজ তাদের ঘৃনা করে। ক্ষমতার বড়াই চিরদিন থাকে না। এই সময় তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-৩ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী আফরোজা খানম রিতাকে ধানের র্শীষ প্রতিকে ভোট দিয়ে জয় লাভের আহ্ববান জানান।
মেলার দ্বিতীয় দিনে অনুষ্ঠিত হয় যাত্রাপালা ‘রহিম-রুপবান। অসম প্রেম-ধাঁচের এই যাত্রাপালার কাহিনী গ্রাম বাংলার মানুষের ঘরে ঘরে সুপরিচিত। চরিত্ররুপায়নে রুপবানের স্বামী বিচ্ছেদের করুন আত্ম-চিৎকার ছিল সকলের কাছে উপভোগ করার মত। এই দিনে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সাটুরিয়া উপজেলা বিএনপির কোষাধ্যক্ষ জনাব খোরশেদ আলম নোমান। তিনি মেলার আগত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠান আপনাদের সকলের অনুষ্ঠান। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আজকের অনুষ্ঠান স্বাথর্ক হয়েছে। তিনি উপস্থিত সকলকে মানিকগঞ্জের মানবিক নেত্রী আফরোজা খানমের (রিতা) সালাম পৌঁছিয়ে দেন।
এ্যাড. অমিত হাসানের উপস্থপনায়, তিন দিন ব্যাপী এই মেলায় আরো উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক জনাব আব্দুর রহমান, দিঘলীয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি জনাব সানোয়ার হোসেন (সানু), প্রভাষক রাজা মিয়া, ইউনিয়ন বিএনপির সম্পাদক আব্দুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ মোকছেদ আলম, উপজেলা যুবদলের আহ্ববায়ক আমীর হামজা, আমজাদ হোসেন, কৃষকদল নেতা সিরাজুল ইসলাম, শিহাব উদ্দিন প্রমুখ।
এদিকে পাগলার মেলা উপলক্ষে দেশের নানাপ্রান্ত থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা মুখরোচক খাবার নিয়ে হাজির হন। এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে আমিত্তি, জিলেপি, সন্দেশ, বারো মিঠাই, শাহী হালিম, চটপটি, পিয়াজুসহ হরেক রকমের রসগোল্লার দোকান। এছাড়া ছিল শিশুদের খেলনা, ঘরের তৈজসপত্রসহ বাঁশ ও লোহার তৈরি নানান রকমের জিনিসপত্র।