শরীয়তপুর প্রতিনিধি: শরীয়তপুর সদর উপজেলার বিনোদপুর ও চিকন্দী ইউনিয়নের নদী ও খাল-বিলে বসানো হয়েছে অবৈধ খনন যন্ত্র ড্রেজার। পাশাপাশি রয়েছে ফসলি জমি খেকো ভ্যাকু মেশিন। ভ্যাকু দিয়ে নির্বিাচারে কেটে ফেলা হচ্ছে তিন ও চার ফসলি উর্বর জমি। ড্রেজার দিয়ে নদী ও খাল থেকে গভীর করে কেটে নেওয়া হচ্ছে বালু। সরকারি সম্পদ (বালু) জনসাধারণের কাছে বিক্রি হচ্ছে চওড়া দামে। খনন করা পাশর্^বর্তী জমি ভেঙ্গে যাচ্ছে গভীর অতলে। প্রশাসনের নাকের ডগায় এইসব অনিয়ম হয়। তাই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ভয়ে প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বিনোদপুর ইউনিয়নের কীর্তিনাশা নদীতে ডজন খানেক ড্রেজার বসিয়ে রাতদিন করে বালু উত্তোলন করা হয়। একই চিত্র রযেছে চন্দ্রপুর বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া চিকন্দী অভিমুখী নদীতেও। সেই নদীতেও রয়েছে আরো ডজনের বেশী ড্রেজার। প্রতিটি ড্রেজারের খনন যন্ত্র যেখান থেকে মাটি উঠায় তার আশপাশের ফসলি জমি ভেঙ্গে পড়ে খনন যন্ত্রেও গোড়ায়। প্রতিবাদ করলে পড়তে হয় ড্রেজার মালিকদের রোশানলে।
বগাদি এলাকায় গিয়ে দেখা যায় ভ্যাকু দিয়ে কেটে ফেলা হচ্ছে ৩ ও ৪ ফসলি জমি। পার্শ্ববর্তী জমির মালিকরা অসহায়ের মতো বসে ভাবছে তাদের জমিতে আর ফসল ফলানো সম্ভব হবে কিনা?
ড্রেজার দিয়ে জোর করে মাটি কেটে নেওয়া এক অসহায় নারী আলেফা জানায়, তার স্বামী আজিত মাদবর বহুবছর পূর্বে মারা গেছেন। তার রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে যা আয় রোজগার হয় তা দিয়ে তার সংসার চলে। তার সেই জমিতে জোর করে ড্রেজার বসিয়ে লাখ টাকার বেশী মূল্যের মাটি কেটে নিয়ে গেছে। তাকে কোন ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়নি।
এলাকাবাসীর দ্বারে দ্বারে ঘুরেও ন্যায় বিচার পায়নি সে। সেখানে উপস্থিত অন্যান্যরা জানায়, ড্রেজার ব্যবসায় অনেক লাভ। সরকারি মাটি পাবলিকের কাছে উচ্চ মূল্যে বিক্রি যেন আলাদিনের চেরাগ। তাদের ক্ষমতার কাছে আমরা অসহায়। প্রতিবাদ করলেই দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে তেড়ে আসে। তাই কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায় না।
বগাদি এলাকার নুরুল হক মাদবর জানায়, তার ৩ ফসলি জমির পাশে মনাই মুন্সীর জমি রয়েছে। সেই জমিতেও ৩-৪ ফসল ফলানো সম্ভব। এখন মনাই মুুুুুন্সী তার জমি খনন শুরু করেছে। এর ফলে পার্শ্ববর্তী সকল জমির উৎপাদন কমে যাবে। এভাবেই ফসলি জমি অনুর্বর ও নষ্ট হয়ে যায়।
ফসলি জমি নষ্ট না করা ও ড্রেজার বসিয়ে জমি ও নদী ভাঙ্গন রোধ করার জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন কৃষক, সাধারণ মানুষ ও এলাকাবাসী।