শরীয়তপুরের মানুষের একমাত্র ভরসা ১০০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতাল। এই হাসপাতালে হরহামেসাই তিনগুনের বেশী রোগী ভর্তি থাকে। বহির্বিভাগেও চিকিৎসা নেয় হাজার রোগী। পাশেই রয়েছে সিভিল সার্জন (সিএস) অফিস ও ভ্যাকসিন সংরক্ষণাগার ইপিআই ভবন। বৃষ্টি হলেই সিএস অফিস সহ স্বাস্থ্য বিভাগের সকল ভবনের আঙ্গিনায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। ডুবে যায় সিভিল সার্জন অফিসের নিচতলা।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল বাউন্ডারির অভ্যন্তরে রাস্তায় ১ ফুটের বেশী পানি জমে যায়। অনেক জায়গায় রয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতা। কোথাও কোথাও স্তুপ আকারে জমে থাকে ডাবের খোশাসহ ময়লা আবর্জণা। হাসপাতালের এমন পরিবেশ মশাসহ বিভিন্ন জীবানুর উৎপাদনে সহায়তা করে বলে ধারনা করছেন রোগী ও রোগীর স্বজনরা।
ভারি বৃষ্টিপাতে সিভিল সার্জন অফিসের নিচতলায় পানি ঢুকে যায়। নষ্ট হয় প্রয়োজনীয় ফাইলপত্র ও আসবাবপত্র। জেলার ভ্যাকসিন সংরক্ষণাগার ইপিআই ভবনের আঙ্গীনাও জমে থাকে পানি। এমন পরিবেশ কারোরই কাম্য নয়।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আশা রোগীরা জানায়, বৃষ্টি হলেই হাসপাতালের রাস্তাঘাট হাটু পানির নিচে চলে যায়। হাসপাতাল ও চারপাশের পরিবেশ খুবই নোংরা। মায়লা ও ডাবের খোশা পড়ে থাকতে দেখা যায় যত্রতত্র। যার মধ্যে পানি জমে এডিস মশার জন্ম হতে পারে। রোগীরা আক্রান্ত হয় ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়া সহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে।
সির্ভিল সার্জন অফিসের চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী আয়নাল হক মোল্যা জানায়, বৃষ্টি হলেই সিভিল সার্জন অফিসের নিচতলার প্রতিটি কক্ষে পানি ঢুকে যায়। আসবাবপত্র ও ফাইলপত্র পানিতে ভিজে যায়। ময়লা ও গন্ধযুক্ত পানি মধ্যে চলাফেরা করতে গিয়ে তাদের বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ হয়।
সিভিল সার্জন ও ইপিআই ভবনের সীমানার মধ্যে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। ড্রেনেজ সমস্যাকে দায়ী করছেন সিভিল সার্জন অফিসের স্টাফরা। বিভিন্ন সময় যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবগত করেও কোন সমাধান পাননি বলেও তারা দাবী করেন।
ইপিআই সুপার মোজাম্মেল হক জানায়, জেলার সকল গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ ও ভ্যাকসিন ইপিআই ভবনে সংরক্ষিত থাকে। সেখান থেকে সকল উপজেলায় ভ্যাকসিন সরবরাহ হয়। জলাবদ্ধতা ভ্যাকসিনের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। দ্রুত জলাবদ্ধতা নিরশন হওয়া দরকার।
সদর হাসপাতালের আবাসকি মেডিকেল অফিসার ডা. আকরাম এলাহী জানায়, ১০০ শয্যার হাসপাতালে হরহামেসা ৩০০ বেশী রোগী ভর্তি থাকে। তাছাড়া আউটডোরে হাজারের বেশী রোগী হয়। হাসপাতালের আঙ্গিনায় পানি জমে থেকে পরিবেশ খুব খারাপ হয়েছে। মশাসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ বেড়ে গেছে। ইতোমধ্যে তিনি নিজ উদ্যোগে ইট ভাটা থেকে রাভিশ এনে রোগীদের চলাচলের পথ তৈরী করেছেন। কয়েকটি নতুন ড্রেন নির্মাণ ও কয়েকটি ড্রেন সংস্কার করলে জলাবদ্ধতা থাকবে না বলে তিনি দাবী করেন। কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি বারবার অবগত করা হলেও কোন সাড়া মেলেনি বলেও তিনি জানান।
সিভিল সার্জন ডা. মো. রেহান উদ্দিন বলেন, বৃষ্টি হলেই তার দপ্তরের সামনে পানি জমে যায়। নিচতলায় পানি প্রবেশ করে। সদর হাসপাতলেও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। নষ্ট হয় ফাইপত্র ও আসবাবপত্র। জলাবদ্ধতার কারনে পানিবাহিত রোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করেও কোন কোন সমাধান মিলছে না। এভাবে চলতে থাকলে পানিবাহিত রোগসহ ডেঙ্গু ম্যালেরিয়া বেড়ে যাবে বরে তিনি ধারণা করছেন।